Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all 1188 articles
Browse latest View live

কনের চুলের জন্য মাস্ট!

$
0
0

ফের বিয়ের মরশুম এসে গিয়েছে৷ এই শীতে আপনিও গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন? মনে রাখবেন, বিয়ের দিন কনের হেয়ার স্টাইলের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে তার লুক৷ কনের চুলের জন্য কী কী মাস্ট থিং? ছকে দিচ্ছে ‘অন্য সময়’

স্ট্রেটনার
বিয়েতে প্রচুর অনুষ্ঠান রয়েছে৷ ফলে আপনাকে নিজের লুক বদলাতে হবে বারংবার৷ কিন্ত্ত কোন পোশাকের সঙ্গে কোন হেয়ারস্টাইল মানাবে তা তো আপনি জানেন না৷ কোনও পোশাকের সঙ্গে স্ট্রেট চুল মানানসই হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে নিজের চেক লিস্টে অবশ্যই হেয়ার স্ট্রেটনার রাখুন৷

কার্লিং টং
অনেক ধরনের পোশাকের সঙ্গে কোঁকড়ানো চুলও ভীষণ ভালো লাগে৷ তাছাড়া সামনের কিছুটা চুল টং করে নেওয়াও ফ্যাশনে বেশ ইন৷ ফলে আপনার কার্লিং টং কেনা অত্যন্ত জরুরি৷ নিজের চেক লিস্টে অবশ্যই কার্লিং টং রাখুন৷

ব্লো ড্রায়ার
আরেকটি দারুণ টুল হল ব্লো ড্রায়ার৷ চুলের হেয়ারস্টাইল বারংবার বদলাতে হবে৷ কিন্ত্ত সবটাই ভীষণ তাড়াহুড়োয়৷ সেক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে নেওয়ার জন্য ব্লো ড্রায়ারই ভরসা৷ ব্লো ড্রায়ারের সঙ্গে ডিফিউসার কিনে নিলে চুলের ময়শ্চারাইজার অক্ষুন্ন থাকবে৷

বড় দাঁতের চিরুনি
বড় দাঁতের চিরুনি সঙ্গে রাখা অত্যন্ত দরকারি৷ কারণ চুলের ওপর দিয়ে অনেক ধকল যাবে এই সময়৷ তার মধ্যে ছোট দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করলে চুল ছিঁড়ে যাবে৷ কিন্ত্ত বড় দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়ার সমস্যা অনেকটা কমবে৷ অর্থাত্‍ সেক্ষেত্রে বড় দাঁতের চিরুনি আপনার হাতিয়ার৷

হেয়ার রোলার
বিভিন্নরকম স্টাইল করার জন্য হেয়ার রোলার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়৷ হেয়ার স্টাইলিস্টের এই টুল অত্যন্ত দরকার হয়৷ ফলে নিজের চেক লিস্টে হেয়ার রোলার রাখতে ভুলবেন না৷

কাঁটা এবং ক্লিপ
বিয়ের সময় চুলের বিভিন্ন হেয়ারস্টাইল বদল করতে হবে৷ আর সেই জন্য প্রচুর কাঁটা এবং ক্লিপ দরকার৷ অনেকসময় শপিং করতে গিয়ে বড় হেয়ার স্টাইলিং টুল কিনতে গিয়ে কাঁটা এবং ক্লিপ কিনতে ভুলে যায় অনেকে৷ এই ছোট হেয়ার টুল না থাকলে ভীষণ অসুবিধা হবে কিন্ত্ত৷

হেয়ার ব্রাশ
চুল মাঝেমধ্যে ব্রাশ করে নেওয়াটা জরুরি৷ ফলে চিরুনির পাশাপাশি হেয়ার ব্রাশ কিনতে ভুলবেন না৷ বিভিন্ন স্টাইল সেট করার সময় হেয়ার ব্রাশ অত্যন্ত দরকার হয়৷


'প্রথম দেখায় প্রেম' ডাহা মিথ্যে, মন আসে শেষে!

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চুরমার হয়ে গেল চিরকালীন ধারণা। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, 'প্রথম দর্শনে প্রেম' ধারণাটি ভিত্তিহীন। বরং তার আগে মাথা চাড়া দেয় শরীরের প্রতি আকর্ষণ।

পয়লা নজরেই কারও প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া বাস্তবে আদৌ সম্ভব কি না, তা যাচাই করতে সম্প্রতি এক সমীক্ষা করেন নেদারল্যান্ডসের গ্রনিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদরা। মোট ৩৯৬ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর অনলাইন সমীক্ষা করা হয়। এঁদের মধ্যে ৬০% ডাচ ও জার্মান মহিলা, যাঁরা সকলেই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাঁদের সাম্প্রতিক রোম্যান্টিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবীদের বিভিন্ন অপরিচিত পুরুষের ছবি দেখিয়ে আকর্ষণের ভিত্তিতে রেটিং করতে বলা হয়। ছবির পুরুষদের প্রতি ঘনিষ্ঠতা, ভালোবাসা, শারীরিক আকর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি, অপরিচিতদের কাউকে দেখে প্রথম দর্শনেই মনে প্রেম জেগে উঠছে কি না, সে কথাও জানতে চাওয়া হয় সমীক্ষায়।

এর পরে আরও দুইটি সমীক্ষায় স্পিড ডেটিংয়ের মাধ্যমে নারী মনের অনুভূতি জানার চেষ্টা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী নারী ও পুরুষকে পরস্পরের সঙ্গে একান্তে ২০-৯০ মিনিট সময় কাটাতে দেওয়া হয়। এর পরে তাঁদের মনোভাব জানতে চাওয়া হয়। পরীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে, ৩২জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে (যাঁদের অধিকাংশ পুরুষ) প্রথম দর্শনে প্রেমের উপলব্ধির কথা জানিয়েছেন। তাঁদের খুঁটিয়ে প্রশ্ন করে জানা গিয়েছে, আকর্ষণের অন্যতম প্রধান বিষয় শারীরিক সৌন্দর্য।

Video: পাতে মাছ থাকলে আপনি সুস্থ! কেন?

$
0
0
মাছ না হলে বাঙালির খাওয়া ঠিক সম্পূর্ণ হয় না।মাছ না হলে বাঙালির খাওয়া ঠিক সম্পূর্ণ হয় না।

'তাঁতির বাড়ির মেয়েরাই তাঁতের শাড়ি পরতে পারেন না'

$
0
0

এমনটাই শুনতে হলো স্থানীয় তাঁতির মুখ থেকে৷ আমাদের কাছে যা নিছক 'স্টোরি' বা 'হেডলাইন', তাঁদের কাছে সেটাই দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম৷ গন্তব্য ফুলিয়া-শান্তিপুর৷ জায়গার নাম দু'টো বললেই যাওয়ার কারণটাও সহজেই অনুমান করা যায়৷ শাড়ির মক্কায় তাঁতিদের জীবনের টুকরো কোলাজ তুলে ধরলেন দেবলীনা ঘোষ মুখোপাধ্যায় আর সুমন্ত চক্রবর্তী

বাংলার তাঁত, খাদি, লিনেন---কী নেই সেখানে! তাঁত জামদানি থকে লিনেন জামদানি, সিকু্যইনড টিসু্য থেকে হাতে বোনা মোটা সুতির শাড়ি, যা পছন্দ, এতদিন যা যা ছিল আপনার ইচ্ছে-তালিকায় সব পেয়ে যবেন এখানে৷ শাড়ি গুলো এত জনপ্রিয়, কলকাতায় বেশ দাম দিয়েই কিনতে হয়, তবুও তাঁতিদের অবস্থার কিন্ত্ত কোনও উন্নতি নেই৷ কেন? জিএসটি-র প্রভাব কীভাবে পড়ছে তাঁদের রুজি-রুটির ওপর? কলকাতা থেকে মাত্র ৮৫-৮৬ কিলোমিটার ব্যবধানে শাড়ির দামেও বা কতটা তারতম্য রয়েছে? এই সব কিছুরই খোঁজ করলো 'অন্য সময়'৷

প্রথম স্টপ: সমবায়

ফুলিয়া স্টেশনের লাগোয়া তিনটি সমবায় রয়েছে পরপর৷ প্রায় ৬০০-৭০০ জন তাঁতি রয়েছেন এক একটা সমবায়ের অধীনে৷ আমরা কথা বললাম, 'টাঙ্গাইল তন্ত্তজীবি উন্নয়ন সমবায় সমিতি'র সঙ্গে৷ দোতলা বাড়ির সামনে শাড়ির দোকান৷ সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে গেলে রয়েছে স্টোর রুম৷ স্টোল, টুকরো কাপড়, নানা ধরনের ফ্যাব্রিকে ঠাসা৷ একতলায় অফিস ঘর৷ মুখোমুখি আরও দুই ঘরের একটাতে স্ত্তপাকৃত শাড়ি৷ অন্যটায় চলছে নকশা আঁকা৷ সঙ্গে বিকিকিনির হিসেব-নিকেশও হচ্ছে সমানতালে৷

'আমরা শাড়ির দাম একটু বেশি রাখি৷ কারণ কোয়ালিটি মেনটেন করি৷ আর এই ডিজাইনও বাইরে কিন্ত্ত কেউ করতে পারবেন না', জানালেন সমবায়ের কর্মী দেবাশিস বসাক৷ সারা মাসে কত কাজ থাকে? প্রশ্ন করতে সমিতির সেক্রেটারি গোবিন্দ বসাক জানালেন, 'সব মাসে সমান থাকে এমনটা নয়৷ পুজোর পর থেকে বেশ ভাঁটা যাচ্ছে কাজে৷ তবে হঠাত্ করে অনেক কাজের অর্ডার চলে এল, এমনটাও হয়৷' শুধু শাড়ি, স্টোল বা সালোয়ার-কামিজের ড্রেস মেটিরিয়াল নয়, অর্ডার দিলে এঁরা তোয়ালে, গামছা থেকে স্টিচড গারমেন্ট---সবই বানিয়ে দেন৷ তবে অন্তত ৫০ পিস অর্ডার করতে হবে৷ পরের ধাপে সমবায়ের নির্দিষ্ট তাঁত ঘুরে দেখার পালা৷ এক একটা টিন বা টালির চাল দেওয়া মাটির ঘরে কাজ করছেন ৪-৫ জন করে৷ কেউ বুনছেন শাড়ি, কেউ তোয়ালে আবার কেউ ধুতি৷ এঁরা মজুরি পান সংখ্যা প্রতি৷ একটা শাড়ি বুনলে পাবেন ৪০০ টাকা৷ ধুতির মজুরি ৩০০ টাকা৷ আর তোয়ালে বুনলে মিলবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা৷ কত দিন লাগে একটা শাড়ি বা ধুতি বুনতে? 'যত কম দিনে পারি, বুনি৷ শরীর ন দিলেও৷ সারা সন্তাহ তো আর ৩০০-৪০০ টাকায় চলে না৷ সংসার আছে তো!'---উত্তর তাঁতি বিনয় বসাকের৷

দ্বিতীয় স্টপ: মহাজনের দোকান

গাড়ি বা বাসে করে গেলে স্টেশনের বেশ কিছুটা আগে থেকেই দেখতে পাবেন রাস্তার ধার দিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে শাড়ির দোকান৷ বেশিরভাগই বাড়ির নিচে শো-রুম৷ এরকমই একটি দোকানে ঢোকা গেল৷ তাঁত, সুতি, সিল্ক কটন, নয়েল, লিনেন, খাদি---সব রকমের শাড়িই পাবেন এখানে৷ সমবায়ের থেকে শাড়ির দাম প্রায় ১০০-২০০ টাকা কম৷ তবে গুণগত মানের ফারাকটাও স্পষ্ট৷ 'ঝরনা শাড়ি, নয়েলে উলের কাজ, পমপম বসানো খাদি বা সুতির শাড়ি---এখন খুব চলছে৷ কলকাতার অনেক দোকানে আমরা সাপ্লাই করি৷ আর অনেক বুটিক রয়েছে যাঁরা এখান থেকে মাল নিয়ে যায়'---জানালেন দোকানের কর্ণধার নয়ন বসাক৷ জিএসটি-র প্রভাব কিছু পড়েছে কি? 'জিএসটি ঠিকভাবে কাজে লাগালে কোনও সমস্যা হয় না৷ কিন্ত্ত এখন এই শব্দটা যে যেমন পারছেন, ব্যবহার করছেন৷ সুতোর দাম হঠাত্ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে জিএসটি-র অছিলায়৷ ফলে শাড়ির দাম তো বড়বেই৷ কিন্ত্ত যাঁরা জিএসটি-র কথা বলছেন খোঁজ নিলে দেখা যাবে অনেকের হয়তো জিএসটি নম্বরই নেই'---জানাচ্ছেন তিনি৷ ফুলিয়া সমবায়ের পাশেই শো-রুম রঘুনাথ বসাকের৷ তাঁর শাড়ি পাড়ি দেয় পুণে, হায়দারাবদ, মুম্বই, বেনারসে৷ জিএসটি-র ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাঁর ব্যবসা৷ 'এখান থেকে ৫০টা শাড়ি পাঠালাম৷ খদ্দের পছন্দ করলেন ৪০টা৷ বাকি ১০টা শাড়ি ফেরত এলো৷ আমাকে কিন্ত্ত জিএসটি দিতে হল ৫০টা শাড়ির ওপরেই'---জানাচ্ছেন রঘুনাথ৷



পরের স্টপ: শান্তিপুরের হাট

এ এক আশ্চর্য জায়গা৷ মুখোমুখি দুটো তিনতলা বাড়ি৷ আর তার মধ্যে প্রায় শ'খানেক তাঁতি৷ সিমেন্টের বাঁধানো মেঝেয় কেউ কাগজ পেতে আবার কেউ বা মাদুর পেতে বসেছেন৷ মাঝে রয়েছে এপার-ওপার দেখতে পাওয়া ছোট ছোট পাঁচিল৷ জায়গা নির্ধারণ করার জন্য৷ সিঁড়ি দিয়ে কিছুটা উঠলে এক পাশে ডিম-টোস্ট, চা, পরোটার ব্যবস্থাও রয়েছে৷ এই সব তাঁতিরা এসেছেন ফুলিয়া, শান্তিপুর সহ স্থানীয় বিভিন্ন জায়গা থেকে৷ হাটের সময় শুরু রাত দু'টো থেকে৷ চলে সকাল ১১টা অবধি৷ বৃহস্পতি আর রবিবার৷ নয়েল, সিল্ক কটন, স্বর্ণচরী, তাঁত, জামদানী, লিনেন, গামছা শাড়ি, সিল্ক কটন, মহাপাড়, 'বাহা' শাড়ি সব পাবেন এক ছাদের তলায়৷ হ্যান্ডলুম যেমন আছে, পাওয়ারলুমের শাড়িও পাবেন৷ ১৮০ টাকা দামে ১২ হাত শাড়িও পাবেন এখানে৷ মোটামুটি ২০০০ টাকা সঙ্গে থাকলেই কিনে ফেলতে পারবেন ৫-৬টা শাড়ি৷ কলকাতা থেকে শাড়ি কিনতে আসেন? প্রশ্ন করতে রবি শেখ জানালেন, 'অনেকে আসেন৷ এখন তো সবাই মোবাইলে শাড়ি বিক্রি করেন৷ আমরা নতুন কিছু বানালেই তাঁদের হোয়াটঅ্যাপ করে ছবি পাঠিয়ে দিই৷ তাঁরাও কোনও ছবি পাঠালে আমরা বানিয়ে দিই সেই মতো৷' বেশি সংখ্যায় শাড়ি কিনতে গেলে কিন্ত্ত যেতে হবে মধ্যরাত পোহালেই৷ সখের বিকিকিনির জন্য অবশ্য সকাল ৮টা-৯টাই যথেষ্ট৷

শেষ স্টপ: তাঁতিদের বাড়ি

ফুলিয়া-শান্তিপুরের সকাল বা দুপুর বেশ নিঃঝুম৷ ব্যস্ততার লেশমাত্র নেই কোথাও৷ টোটো করে গলিপথ ধরে ঘুরলে শুধু প্রতিটা বাড়ি থেকে শোনা যায় তাঁত চালানোর শব্দ৷ কোথাও হ্যান্ডলুম আবার কোথাও পাওয়ারলুম৷ এরকমই ছোট্ট মাটির বড়িতে তাঁতে 'বাহা' শাড়ি বুনছেন প্রতিমা বসাক৷ সিরিয়ালটা দেখেছিলেন? 'হঁ্যা, দেখতাম তো৷ একবার তো বাহা এখানেও এসেছিল৷ তখনও দেখতে গিয়েছিলাম'---উত্তর তাঁর৷ দিনে একটা শাড়ি তৈরি করতে পরেন প্রতিমা৷ মজুরি পান ২৫০-৩০০ টাকা৷ শাড়ি প্রতি৷ পাশের ঘরেই পাওয়ারলুম চালাচ্ছেন প্রশান্ত বসাক৷ রোজ ৩-৪টে শাড়ি তৈরি করেন তিনি৷ মজুরি পান ১২০ টাকা শাড়ি প্রতি৷ এর মধ্যে আবার ইলেকট্রিসিটির খরচ রয়েছে৷ 'তাঁতির বাড়ির মেয়েরা কিন্ত্ত তাঁতের শাড়ি পরতে পারেন না৷ তাঁরা ছাপা শাড়ি পরেন৷ কোনও শাড়িতে খুঁত বেরোলে মহাজন নেন না৷ সেই শাড়ি তখন আমাদের মেয়ে-বউরা পরেন৷ কিন্ত্ত শাড়ির টাকাটা মহাজন কেটে নেন'---জানাচ্ছেন প্রশান্ত৷

ফুলিয়া-শান্তিপুরের বেশিরভাগেরই পদবী বসাক৷ অন্য সম্প্রদায়েরও কিছু মানুষ তাঁত বোনেন এখানে৷ তারই মধ্যে রয়েছেন বাপ্পা শেখ৷ তাঁর বেশিরভাগ তাঁতিই কোচবিহারের৷ বাপ্পার বড়িতেই তাঁদের বসত৷ রান্নাও হয় সবর একইসঙ্গে৷ 'তাঁদের বাজার ভালো৷ কিন্ত্ত তাঁতিদের নয়৷ আমরা এখানে মহাজনের জন্য কাপড় বুনি৷ তিনিই ডিজাইন দেন৷ ওঁকে ছাড়া অন্য কাউকে শাড়ি বিক্রি করতে পারবো না৷ লাভের মুখ আমরা দেখি না৷ তবে সারা বছর কাজটা পাই৷ সংসার চলে যায় কোনওক্রমে'---জানালেন হতাশ বাপ্পা৷ মহাজনের পরিবর্তে সমবায়ের সঙ্গে কাজ করলে সুবিধে হয় কি? 'সেখানে আরও সমস্যা৷ এ বছর প্রায় ৮ মাস কাজ ছিল না সমবায়ের কাছে৷ কাজ দিতে এক দিন দেরি হলেই সমবয় পুরো কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দেয়৷ তখন অতগুলো জিনিস নিয়ে আমরা কী করবো?---প্রশ্ন মুজিবুর শেখের৷ বাপ্পার সঙ্গেই তাঁত বোনেন তিনি৷

কিছুদুর এগোলেই সমীর বসাক আর শান্ত বসাকের টিনের ঘর৷ দুই ভাই এই কাজই করেন৷ তবে ছেলে-মেয়েরা অন্য কিছুক করুক এমনটাই ইচ্ছে তাঁদের৷ দু'জনেই বুনছেন সিকু্যইন আর শেলের বোতাম দিয়ে বোনা শাড়ি৷ যা দক্ষিণ কলকাতার নাম করা দোকানে বিকেয় ৮-৯ হাজার টাকায়৷ শান্ত আর সমীর অবশ্য মজুরি পান শাড়ি প্রতি ৪০০ টাকা৷ কলকাতায় এই শাড়িগুলোর দাম শুনে হতবাক তাঁরা৷ সমীর বলেই ফেলেন, 'আপনারা লিখুন না আমাদের এই দুর্দশার কথা৷ তাহলে তো আমাদের একটু উপকার হয়৷ মজুরি বাড়ে কিছুটা৷' শুধু লিখে বা সরকারি প্রকল্প করে সত্যিই কি কিছু লাভ হবে? বোধহয় না৷ কারণ সমস্যা আরও অনেক গভীর৷

এবার আমাদেরও ফেরার পালা৷ ঝুপ করে সন্ধে নামার আগেই রওনা দিতে হবে শহরের উদ্দেশ্যে৷ ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে আবার অন্য কোনও 'স্টোরি' নিয়ে৷ শুধু কানে বাজতে থাকবে দিনভর শোনা তাঁতের আওয়াজ৷ তিরতিরে, মিঠে বাতাসে থেকে যাবে এক অজানা আত্মীয়তা৷ যা বারবার মনে করাতে থাকবে আবার ফিরে আসতেই হবে এখানে৷


তাহলে মৌটুসি হবে ধ্রুবতারা?

$
0
0

সৌজন্যে অনলাইন৷ মাউস ক্লিকেই বদলে যাবে নক্ষত্রের নাম৷ চাঁদে জমি কেনার মতো , এক্ষেত্রেও মিলবে দলিল৷ কিন্ত্ত সত্যিই কি তারা কেনা সম্ভব ? খোঁজ নিলেন দেবলীনা ঘোষ মুখোপাধ্যায় আর পীযূষ আশ৷

এত দিন কী না করেছেন সঙ্গীর মন পাওয়ার জন্য৷ আকাশের চাঁদ -তারা অবধি এনে দিতে পারেন বলেও দাবি করেছেন৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি৷ স্বাভাবিক৷ কাব্য করে বলা আর বাস্তবে করার মধ্যে বিস্তর ফারাক৷ সে আর কে না জানে ! কিন্ত্ত এবার পারবেন৷ আকাশ থেকে তুলে এনে দিতে পারবেন না ঠিকই , কিন্ত্ত একটা তারা অনায়াসে উপহার দিতে পারেন সঙ্গীকে৷ অন্তত সেরকমই দাবি করছে ইন্টারনেটে বহু ওয়েবসাইট৷

কী ভাবছেন , মাসের ১০ তরিখেই অ্যাকাউন্ট ফাঁক হয়ে যায় , এই চাঁদ -তারা আনা আপনার কম্মো নয় ? আরে , আমার -আপনার মতো মানুষের কথা মাথায় রেখেই তো এই ব্যবস্থা৷ ১৬০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন তারা৷ শুধু আপনাকে সঙ্গীর নাম আর সঠিক ঠিকানা বলতে হবে৷ একেবারে লোকেশন সমেত৷ তারপর সংস্থার তরফ থেকে আপনার লোকেশনের একটি তারার ল্যাটিটিউড -লংগিটিউড দিয়ে আপনার সঙ্গীর নামে নামকরণ করে দেওয়া হবে৷ হাতে রইল পেনসিলের মতো আপনার হাতে থাকবে একটা সার্টিফিকেট৷ যেখানে লেখা থাকবে এতদিন পর্যন্ত যে তারাকে ‘অরুন্ধতী ’ বা ‘ধ্রুব ’ নামে চিনতেন আজ থেকে তার নাম মৌটুসি বা লাল্টু! বিষম খেলেন ? তাতে সাইটগুলোর বয়েই গেল৷ ফোন করলেই বুঝতে পারবেন সে কথা৷ বরং তারা আপনাকে একসঙ্গে দু’টো তারা কেনার অফার দেবে৷ একটা আপনার নামে একটা আপনার সঙ্গীর নামে৷ তারপর আপনাদের পাশাপাশি লোকেশনে সেট করে দেবে৷ ব্যস , আর কী ! তারপর প্রেম ভাঙুক বা ডিভোর্স হোক আপনি ওই আড়াই -তিন হাজার টাকায় কেন তারার পানে চেয়ে চেয়েই সুখী থাকবেন৷ এরকমই একটি সাইট ‘ওয়ে হ্যাপি ’৷

ফোন করে তারা কিনতে চাইলে সংস্থার প্রতিনিধি আমু জানান , ‘আমরা লোকেশন অনুযায়ী তারার নামকরণ করি৷ এটা একেবারে অন্য ধরনের উপহার৷ যিনি দিচ্ছেন এবং যিনি পাচ্ছেন দু’জনেই খুশি হ ’ন এই উপহারে৷ তবে এটা কোনও লিগ্যাল সার্টিফিকেট নয়৷ পুরো বিষয়টাই শুধুমাত্র আনন্দ দেওয়ার জন্যই ’৷ আরেকটি সাইট , ‘স্টার রেজিস্ট্রেশন ডট কম ’-এর সাপোর্ট এজেন্ট ফ্র্যাঙ্কি দাবি করলেন , ‘আমরা আসল তারা নিয়েই কাজ করি৷ কোনও ভাঁওতাবজি নেই৷ তবে তাতে সেই তারার সায়েন্টিফিক নাম বা অফিশিয়াল নাম পরিবর্তিত হবে না৷ পুরো ব্যবস্থাটাই ব্যক্তিগত আনন্দের জন্য৷ তবে আমরা ক্রেতার নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিই৷

যে তারাটা আমরা বিক্রি করছি সেটা যদি ক্লায়েন্টের পছন্দ না হয় বা আমাদের সার্ভিস যদি অপছন্দ হয় , পুরো টাকা ফেরত দিয়ে দিই৷ ’এতো গেল ওয়েব সাইটগুলির কথা৷ তাদের দাবি দাওয়া৷ কিন্ত্ত তারাদের নামকরণের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক নিয়মটা ঠিক কী ? এককথায় এর উত্তর হল , ‘সেলেসটিয়াল বডি ’ বা মহাজাগতিক জ্যোতিষ্কের নামকরণের বা তালিকাভুক্তির একমাত্র এক্তিয়ার আছে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন ’-এর৷ এটি মহাকাশ গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা , যাদের ঘোষিত ‘মিশন ’ হল সহযোগিতার ভিত্তিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করা৷ এই সংস্থার সদর দফতর প্যারিসে৷ ১৯১৯ সালের ২৮ জুলাই থেকে (অর্থাত্ প্রায় ১০০ বছর ধরে ) এই সংস্থা মহাজাগতিক জ্যোতিষ্কের তালিকাভুক্তির কাজ করে চলেছে৷

তারা কেনা কিংবা তারার নামকরণের ব্যাপারে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন ’-এর সাফ বক্তব্য বাণিজ্যিকভাবে তারার নামকরণ কিংবা কেনাবেচা কোনওটাই বৈধ নয়৷ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গ্রহনক্ষত্রের ক্যাটালগ তৈরির জন্য এদেরই অধিনস্ত একটি সংস্থা কাজ করে৷ এই সংস্থার নাম ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন স্টার নেমস ’৷ এর বাইরে কোনও বাণিজ্যিক সংস্থার বৈধতা নেই৷ আইএইউ আরও জানাচ্ছে , অধিকাংশ তারাই আলফা -নিউম্যারিক হিসেবে চিহ্নিত৷ যেমন এইচআর -৭০০১ , এইচডি -১৭২১৬৭৷ ফলে মানুষের নামে নামকরণ হলে তার বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও থাকছে না৷ বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মানুষের নামে তারার নামকরণ হয় বটে , তবে তার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের কোনও সম্পর্ক নেই৷ এই নামকরণ পুরোপুরি বিজ্ঞান কিংবা সংস্কৃতির স্বার্থে৷

জ্যাজে বেজে উঠল ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’

$
0
0

বাংলার বাউল আর আমেরিকার জ্যাজ মিলিত হল আমেরিকান সেন্টারে৷ সেই অ্যারি রোলান্ড জ্যাজ কোয়ার্টেট-এর সঙ্গে কথা বলে লিখছেন অভিজিত্ সেন

আমেরিকার একটি জ্যাজ মিউজিকের দল যদি কলকাতায় এসে 'এই পথ যদি না শেষ হয়' বাজায়, তবে কেমন হত? সোম-সন্ধ্যায় এমনটাই হল যখন নিউ ইয়র্কের অ্যারি রোলান্ড জ্যাজ কোয়ার্টেট বাঙালির সবথেকে প্রিয় 'মোবাইক সং' বাজিয়ে দর্শকদের তুমুল হাততালিতে ভেসে গেল৷ তিন বছর আগে, শেষ ভারত সফরে এসে 'একদিন পাখি উড়ে যাবে' বাজিয়ে একই ভাবে চমকে দিয়েছিল তারা৷

অনুষ্ঠানের আগে, আমেরিকান সেন্টারে এক আড্ডায় দলের প্রধান এবং ডবল বেসবাদক অ্যারি রোলান্ড বললেন, 'আমরা এই ভাবেই স্থানীয় শিল্পী ও দর্শকদের সঙ্গে চিন্তাভাবনা ভাগাভাগি করে নিতে চাই৷ সেই কারণেই বাংলা লোকগানের একটি দলের সঙ্গে আমরা আজ অনুষ্ঠান করছি৷ এতে দু'পক্ষই লাভবান হবেন৷'

দলটি সুইং ও বিবপ ধারার বাজনা বেশি বাজালেও, অ্যারি জানালেন, তাঁরা মিউজিয়াম সংগ্রহ হয়ে থাকতে চান না, বরং প্রতি বারই নতুন কিছু উপস্থাপন করতে চান৷

দেশে-বিদেশে দল নিয়ে অ্যারি করেছেন একশোরও বেশি সফর৷ ভারতেই এলেন এই নিয়ে সাত বার৷ অল্টো-স্যাক্সোফোনবাদক জায়েদ নাসেরের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব তিন দশকের৷ ড্রামবাদক কিথ বালার সঙ্গে বাজাচ্ছেন দেড় দশক৷ সদস্যদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নতুন গিটারিস্ট পাসকালে গ্রাসো৷

কিথের স্পষ্ট মনে আছে ২০১৪ সালে দিল্লির এক অনুষ্ঠানের কথা, যেখানে রাজস্থানের লোকগানের দল 'দ্য বাড়মের বয়েজ'-এর সঙ্গে তাঁদের যুগলবন্দি ছিল৷ খাওয়াদাওয়ার জন্য পাসকালের প্রথম পছন্দ সাইপ্রাস৷ আবার জায়েদের মনে হয় সংস্কতির দিক থেকে প্রত্যেকটি দেশের কিছু দেওয়ার আছে৷

অ্যারির কাছে ভারত হল 'সেকেন্ড হোম'৷ সাতের দশকে মা-বাবা চাকরিসূত্রে ভারতে থাকায়, তাঁর বাল্যকাল কাটে দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরুতে৷ দেশে ফিরে, চার বছর জ্যাজ সঙ্গীতের তালিম নেওয়ার পর, ১৬ বছর বয়সে পেশাদার বেসবাদক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ৷

অ্যারির মতে, দেশে-বিদেশে জ্যাজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি বড় মাধ্যম৷ বললেন, 'এক সময় আমেরিকাও জাতি, ধর্ম, বর্ণতে বহুধাবিভক্ত ছিল৷ তখন জ্যাজই সবাইকে এক সুরে বেঁধেছিল৷'

ভালো জ্যাজ শিল্পী হতে গেলে কী করতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে অ্যারির সাফ কথা, 'প্রত্যেক দিন নতুন নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছতে হবে৷ সেটা ক্যাফে হতে পারে, পাব হতে পারে এমনকি পার্কও৷ কিন্ত্ত লিভিংরুমে বসে থাকলে সেই প্রাণশক্তি আসবেই না৷ আমরা হয়তো বিয়ন্স বা অ্যাডেলের মতো জনপ্রিয়তা পাবো না, কিন্ত্ত সমাজ আমাদেরও চায়৷'

মার্কিন দলটির সঙ্গে একযোগে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়ে উসিত লোকগানের দল 'ফোকস অফ বেঙ্গল'৷ দলের লিড ভোকালিস্ট দেবলীনা ভৌমিক বললেন, 'অল্প মহড়াতেই দু'দলের মধ্যে একটি সাঙ্গীতিক বন্ধন তৈরি হয়ে গেল৷'

অনুষ্ঠান শেষে দর্শকদের তুমুল হাততালি যেন বলতে চাইল 'তোমায় হূদমাঝারে রাখব ছেড়ে দেবো না৷'

জ্যাজ আসলে কী?

আজ থেকে ২০০ বছর আগে, ১৮১৭ সালে লুইসিয়ানা প্রদেশের নিউ অরলিন্স শহরের পুর কর্তৃপক্ষ আফ্রিকা থেকে আসা ক্রীতদাসদের নাচ-গানের জন্য একটি জায়গা চিহ্নিত করেন৷ নাম রাখা হয় কঙ্গো স্কোয়্যার৷

১৮৯৫ সালে কর্নেটবাদক বাডি বোল্ডেনের তৈরি গানের দলই প্রথম জ্যাজ ব্যান্ড৷ এর পর স্কট জপলিন, ডব্লু সি হ্যান্ডি এবং কিং অলিভারের মতো শিল্পীরা জ্যাজ নিয়ে নানা রকম সৃজনশীল কাজ করেন৷ জ্যাজের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি অবদান অ্যাফ্রো-আমেরিকানদের৷

আজ থেকে ১০০ বছর আগে, ১৯১৭ সালে, গানের দল ওরিজিনাল ডিক্সিল্যান্ড জ্যাজ ব্যান্ড প্রথম জ্যাজ রেকর্ড 'লিভারি স্টেবল ব্লুজ' প্রকাশ করে৷

জ্যাজের সফর চলেছে বিভিন্ন পর্বের মধ্যে দিয়ে৷ উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে জনপ্রিয় ছিল 'র্যাগটাইম'৷ এই যুগের উল্লেখযোগ্য শিল্পী স্কট জপলিন ও টমি টার্পিন৷

বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে, দুই থেকে চারের দশকে, পর পর আসে ব্লুজ, ডিক্সিল্যান্ড এবং সুইং বা বিগ ব্যান্ড জ্যাজ৷ পিয়ানোর সঙ্গে আসে ট্রাম্পেট, ড্রামস ও স্ট্রিং বেস৷ ডিক্সিল্যান্ড বা সাবেকি জ্যাজের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি লুই আর্মস্ট্রং৷ অন্য দিকে, সুইং জ্যাজের শিল্পীরা ছিলেন প্রাণশক্তিতে ভরপুর৷ তাঁদের সুর-তাল-ছন্দে মেতে উঠত ডান্স ফ্লোরও৷ এই যুগের প্রবাদপ্রতিম শিল্পীরা ছিলেন ডিউক এলিংটন ও বেনি গুডম্যান৷ ছ'য়ের দশকে এলিংটনের ব্যান্ড বাজিয়ে যায় কলকাতাতেও৷

চারের দশকে সুইং ছেড়ে সবাই মজলেন বিবপ-এ৷ নাচের তাল ছেড়ে এই ধারার জ্যাজশিল্পীরা আনলেন কঠিন কর্ড প্রোগ্রেশন৷ সুরেও এল বৈচিত্র্য৷ পাশাপাশি চালু হল স্ক্যাট সিঙ্গিং যেখানে গানের কোনও নির্দিষ্ট কথাই থাকত না৷ এই যুগের বিখ্যাত শিল্পীরা হলেন ডিজি গিলেস্পি, চার্লি পার্কার, এলা ফিত্সজেরাল্ড ও বেটি কার্টার৷ এই ধারার জ্যাজই জনপ্রিয়তা পায় ছ'য়ের দশকের কলকাতায়৷ তখন পার্ক স্ট্রিট মানেই প্যাম ক্রেন, ব্র্যাজ গনজালভেস, লুইজ ব্যাঙ্কস, কার্লটন কিটো ও ঊষা উথুপ৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জ্যাজ দুনিয়ায় এল পরিবর্তন৷ কুল জ্যাজ নিয়ে প্রবেশ করলেন মাইলস ডেভিস৷ উদ্দাম, উচ্চকিত সঙ্গীতের স্থান নিল মোলায়েম, ধ্রুপদী ধাঁচ৷ এর পর আরও বহু ধারায় বয়েছে জ্যাজ৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোডাল জ্যাজ ও অ্যাসিড জ্যাজ৷


এবার শীতে সাজুন জমিয়ে

$
0
0

নিজেকে রঙিন করে সাজিয়ে তোলার জন্য দারুণ মরশুম শীত৷ স্টাইলিশ বুট এবং উলের পোশাক টিম-আপ করে ফ্যাশনিস্তা হয়ে উঠতে পারেন এই মরশুমে৷ কিন্ত্ত বাধা হয়ে দাঁড়ায় রুক্ষ ত্বক, শুষ্ক চুল কিংবা ফাটা ঠোঁট৷ কীভাবে এই বাধাগুলি অতিক্রম করে শীতকালেও অনন্যা হয়ে উঠবেন? টিপস দিচ্ছে 'অন্য সময়'

সুন্দর ত্বকের জন্য..

টিপস ১- ময়শ্চারাইজার বদলানো দরকার

প্রথমেই নিজের ময়শ্চারাইজারের বোতল বদলে নিতে হবে এই মরশুমে৷ ওয়াটার বেসড ময়শ্চারাইজারের বদলে অয়েল বেসড ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন৷ ত্বককে নরম ও সুন্দর করে তোলার জন্য দিনে একাধিকবার ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি৷

টিপস ২- সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে

শীতে রোদের তেজ কম, তাই সানস্ক্রিন না ব্যবহার করলেও চলে৷ এই ধারণা কিন্ত্ত একেবারে ভুল৷ সূর্যের নরম আলোও আপনার ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে৷ ফলে এই মরশুমেও দিনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে৷

টিপস ৩- জল খাওয়া জরুরি

শীতকালে ত্বক ভীষণ রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়৷ শুধুমাত্র বাইরে থেকে ময়শ্চারাইজ করলে চলবে না৷ বরং প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ এটি আপনার ত্বককে ভিতর থেকে হাইড্রেট করবে৷ ফলত আপনার ত্বক শীতকালেও হয়ে উঠবে সুন্দর৷

টিপস ৪- খুব গরম জলে স্নান নয়

ভীষণ শীতে গরম জলে স্নান করতে বেশ ভালো লাগে৷ তবে নিয়মিত গরম জলে স্নান করা বন্ধ করুন৷ কারণ গরম জল ত্বক রুক্ষ করে তোলে৷ তার চেয়ে বরং ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন৷ ত্বক ভালো থাকবে৷

মেকআপের ক্ষেত্রে…

টিপস ১- সঠিক রং বাছতে হবে

শীতকালে মেকআপ করার সময় সঠিক রং বাছাই করা জরুরি৷ এই মরশুমে চোখে খয়েরি এবং ধূসর শেডের আইশ্যাডো অ্যাপ্লাই করুন৷ হাল্কা সাজের সঙ্গে নিউট্রাল লিপ কালার ব্যবহার করতে পারেন৷ তাছাড়া বেশ বোল্ড লিপ কালার ট্রাই করা যেতে পারে৷

টিপস ২- মেকআপের আগে লোশন ব্যবহার

যদি আপনার ত্বক খুব রুক্ষ ধরনের হয় তাহলে মেকআপ করার আগে অবশ্যই ভালো কোনও লোশন লাগিয়ে নিন৷ তাহলে ত্বকের ময়শ্চার বজায় থাকবে৷

টিপস ৩- ফাউন্ডেশন বদলান

ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে সঙ্গে ফাউন্ডেশনও বদলাতে হবে৷ ক্রিম বেস লিকু্যইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে ভালো হয়৷ শুধু লক্ষ্য রাখবেন যেন স্কিন টোনের সঙ্গে ফাউন্ডেশন ম্যাচ করে৷

চুলের জন্য…

টিপস ১- গরম জলে চুল ধোবেন না

গরম জল ত্বকের মতো চুলকেও শুষ্ক করে দেয়৷ ফলে গরম জল দিয়ে চুল ধোবেন না| ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারলে খুব ভালো হয়৷ একান্ত তা সম্ভব না হলে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন৷

টিপস ২- কন্ডিশনার জরুরি

শীতে চুল বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে৷ তাই বিশেষ করে শীতকালে কন্ডিশনার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি৷ অন্যান্য মরশুমে যতটা কন্ডিশনার ব্যবহার করেন, এই মরশুমে তার চেয়ে বেশি কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে৷

টিপস ৩- অয়েল মাসাজ নিন

শীতকালে খুশকির সমস্যাও খুব বেশি হয়৷ যাতে সেই সমস্যা না হয় সেই কারণে স্যালোঁয় অয়েল মাসাজ নিতে পারেন মাঝেমধ্যে৷ বাড়িতে মায়ের হাতে হট অয়েল মাসাজও নিতে পারেন৷


১৮ বছর হর্ন দেননি, গাড়ি চালিয়ে নজির

$
0
0

সেই বিরল কীর্তির কারণেই , আজ তাঁকে সম্মান জানানো হবে৷ কিন্ত্ত কীভাবে ১৮ বছর হর্ন না বাজিয়ে গাড়ি চালালেন? লিখছেন সুমিত দে

ছোট্ট একটা খবর৷ ‘পাটুলির ‘মানুষ মেলা ’য় শনিবার সন্ধ্যায় পুরস্কৃত করা হবে দীপক দাসকে৷ কারণ ? ব্যস্ত শহর কলকাতার বুকে প্রতিদিন গাড়ি চালালেও , টানা ১৮ বছর ধরে কখনও হর্ন বাজাননি তিনি৷ অসহিষ্ণু পৃথিবীর বুকে , কে এই একবিংশ শতাব্দীর আশ্চর্য মানুষ ? সন্ধান পেতে হাজির হয়েছিলাম পাটুলির কাছের মেট্রো স্টেশন , ‘ক্ষুদিরাম ”-এ৷ দীপকবাবুর কীর্তি-কথা শুনে অবাক , স্টেশন মাস্টার শুভাশিস বিশ্বাস৷ ‘এমন মানুষ এখানে আছেন ! জানি না তো ! যদি তাঁর দেখা পান , আমার স্যালুট জানাবেন৷ ’ অগত্যা সাইকেল রিকশা চেপে , গন্তব্য পাটুলি থানা৷ শরণাপন্ন হতে হল থানার ওসি অভিজিত্ ঘোষের৷ দীপকবাবুর কথা শুনে তাঁর বক্তব্য , ‘ওনার গাড়ির হর্ন খারাপ না তো ?” খারাপ হলেও , তা ১৮ বছর ধরে ? ‘এমন মানুষের কথা তো আমার জানা নেই৷ জানতে পারলেই , আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে৷ ’ ব্যর্থ হয়ে থানার গেটের সামনে আসতেই , এগিয়ে এলেন এক পুলিশকর্মী৷ ‘বলছি কী , থানায় ‘মানুষ মেলা ’র লেটার হেডে একটা চিঠি জমা রয়েছে৷ দেখুন , ওতে যদি মেলা -উদ্যোক্তার নাম -ফোন নম্বর পেয়ে যান৷ ’ তাঁর কথা মতোই ফাইলের চিঠিতে পাওয়া গেল মেলা -উদ্যোক্তা সৈকত সরকারের নাম , নম্বর৷ তাঁর কাছ থেকেই জোগাড় হল দীপকবাবুর নম্বর৷

ফোনে ধরতেই দীপকবাবু জানালেন , ‘আমি তো ডিউটিতে৷ আপনার ওইদিকেই যাচ্ছি৷ আধঘণ্টার মধ্যে মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারির সামনে আসতে পারবেন ? যেতে যেতে কথা হবে৷ ’ সেই মতোই দাঁড়ালাম৷ ঠিক সময়েই নিঃশব্দে এসে দাঁড়ালো রুপোলি ওয়গন -আর৷ গাড়ির ভিতর থেকে হাসিমুখে হাত নাড়লেন , বছর ৫২ -র দীপকবাবু৷ ‘চলুন বাড়ি৷ ওখানে বসে কথা সেরে, তারপর যাব৷ ’ কথামতো গাড়িতে বসা গেল৷ তাঁর ফ্ল্যাটের সাদা দরজায় কোনও নাম নেই!

সাঁটা এক রাক্ষসের ছবি , লেখা ‘শব্দরাক্ষস’৷ ঘরের ইতিউতি সাঁটা পোস্টার ‘ডু নট হঙ্ক ইয়োর হর্ন‘, ‘হর্ন ইজ আ কনসেপ্ট , আই কেয়ার ফর ইয়োর হার্ট..... দীপক৷ ’ স্ত্রী রীতা , কন্যা অমৃতাকে নিয়ে দীপকবাবুর ছোট্ট সংসার৷ বসার ঘরে ছোট এক বুক-সেলফ৷ তাতে ভর্তি বই৷ বেশ কিছু কবিতার৷ কবিতা ভালোবাসেন বুঝি ? ‘একটু-আধটু লিখিও৷ এই কবিতার জন্যই তো আজ আপনি এখানে৷ ’ লাজুক হাসিতে জানালেন দীপকবাবু৷ তার মানে ? ‘মানে , এই যে গাড়ি চালাতে হর্ন বাজাই না , শব্দ করি না , সেটা তো কবিতার জন্যই৷ ’ কী রকম ? ‘২০০০ সালে মেয়ে হয়৷ তখন নিজের একটা সুমো ছিল৷ তার আগের কথা , কী বলি ? বারো ক্লাস অবধি পড়ে, লেখাপড়া ছেড়ে দিই৷ এক সময় সাইকেল চালিয়ে, লোকের বাড়ি বাড়ি কাগজ দিয়েছি৷

ময়দান মেট্রো রেলে হেল্পারের কাজ করেছি৷ মামা গাড়ি চালাতে , তাঁর কাছে গাড়ি চালানো শিখে , ৫ ডিসেম্বর ১৯৯১ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাই৷ তারপর টুকটাক এর-তার গাড়ি চালিয়ে, ধার করে একটা সুমো কিনি৷ সেটাই চালাতাম৷ ১০-১২ বছর টেনেছি৷ কিন্তু ধার ঠিকমতো শোধ করতে না পারায় , বছর দু’য়েক হল সেটা একজনকে দিয়ে, এখন একজনের এই গাড়িটা চালাই,’ বলছিলেন দীপক৷

যোগ করলেন , ‘এক প্যাসেঞ্জারকে নিয়ে গল্ফ গ্রিন গেছি৷ তাঁকে ছেড় , ওখানে একটা গাছের নীচে বসে , একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম৷ তখন বাচ্ছাদের স্কুল ছুটি হয়েছে৷ চারিদিকে শুধু গাড়ি৷ বিকট হর্নের শব্দ৷ কে আগে যাবে! শব্দবাজি তো ৬৫ ডেসিবেলের বেশি হবে না জানি , কিন্তু হর্নের শব্দ ? কত ডেসিবেল অবধি ? জানি না৷ ওই বিকট শব্দের মাঝেই বসে পড়ছিলাম , জীবনানন্দ দাশের একটা কবিতা৷ সেখানে একটা লাইন ছিল , ‘এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্ণে শান্তি আসে মানুষের মনে৷ ‘ এই লাইনটাই যে কীভাবে মনে গেঁথে গেল ! সেই মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম , আজ থেকে কিছুতেই আর হর্ন বাজাব না৷ শব্দ করব না৷

সেই শুরু৷ তারপর আজ অবধি জীবনে হর্ন বাজাইনি৷ গাড়ি থেকে হর্ন খুলেই দিয়েছিলাম৷ ‘বলেন কী ! অসুবিধে হইনি ? ‘না ! কীসের অসুবিধে ! হর্ন না বাজিয়ে , গাড়ি নিয়ে কোথায় না গেছি ? সুন্দরবন , শিলিগুড়ি , সেখান থেকে মিরিক হয়ে বাঘমুন্ডি ! ননস্টপ ন ’ঘন্টা গাড়ি চালিয়েছি৷ গাড়িতে হর্নই নেই৷ ’ তা হলে গাড়িতে হর্ন থাকে কেন ? ‘ভগবানই জানেন ! আপনি ঠাকুর নমস্কার করেন কেন ? জানেন ? সে রকমই৷ সকলে জানেন , গাড়িতে হর্ন থাকলেই বুঝি বাজাতে হয়৷ আমি ওই সকলের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি৷ আসল কথাটা কী জানেন ? টাইম , স্পিড অ্যান্ড স্পেস৷ এটা ঠিক না থাকলে , গাড়ি কেন জীবনও ঠিক চলবে না৷ আর এই তিনটেকেই বাঁধতে হয় ধৈর্য্য দিয়ে৷ তা হলেই সব সম্ভব৷

লোকে আগে আমাকে ‘পাগল ’ বলতো৷ আজ তারাই সম্মান করে৷ তাদের দেখিয়ে দিয়েছি , সাধনা দিয়ে সব সম্ভব৷ জানেন , স্টেট ব্যাঙ্কের একজন একবার গাড়িতে উঠেছিলেন৷ নেমে যাওয়ার সময় , নম্বর নিয়েছিলেন৷ বেশ কয়েকদিন পর , হঠাত্ একদিন ফোন করে ওনাদের হেড অফিসে যেতে বলেন৷ গিয়ে দেখি , সেখানে একটা সাদা বোর্ডে লেখা , ‘শব্দদূষণ নিয়ে বক্তব্য রাখবেন গাড়িচালক দীপক দাস৷ ’ বক্তব্য রেখেছিলাম৷ তবে সেই দিনটার মতো আনন্দ , জীবনে পাইনি৷ আজও ভাবি , সরকারি , প্রশাসনিক মহল থেকে যদি একটু সুযোগ পেতাম , তা হলে কলকাতা শহরকে কীভাবে শব্দমুক্ত বানাতে হয় , সেটা করে দেখাতাম৷ কথায় না , কাজে৷ ’কিন্তু হর্ন না বাজানোয় , ব্যস্ত সওয়ারির কোনও সমস্যা হয়নি ? ‘না৷ এমন আদেশ দু’-একবার এসেছিল৷ কিন্তু তাঁদের হাত জোড় করে বলেছি , আমায় কোনও টাকা দিতে হবে না৷ প্লিজ , অসুবিধে হলে নেমে যান৷ আমার গাড়ি কোনও শব্দ করবে না , সরি৷ কেন অকারণ এত শব্দ বলতে পারেন ? এই তো আমার মেয়ে ক্লাস টুয়েলভে পড়ে৷ সাইকেল চালিয়ে পড়তে যায়৷ ওর সাইকেলে কোনও বেলই নেই৷ অতটুকু মেয়ে কী করে চালাচ্ছে ? আসলে শব্দ করলেই শব্দ , না করলেই নয়৷ ” তা আপনার বাড়ির দরজায় বেল বাজে তো …নাকি ? ‘এইটা ভালো বলেছেন৷ হুম , বেল একটা আছে বটে , তবে ওটাকে এবার সরাবো৷ ওটা খুলে , মাটির একটা ঘণ্টার ব্যবস্থা করব৷ এই নতুন বছরেই …দেখি৷ ’


VDO: আপনি কি মানসিকভাবে দৃঢ়? ৫ পয়েন্টে জানুন

$
0
0
আপনি কি মানসিকভাবে দৃঢ়? ৫ পয়েন্টে জানুনআপনি কি মানসিকভাবে দৃঢ়? ৫ পয়েন্টে জানুন

১৮ বছর হর্ন দেননি, গাড়ি চালিয়ে নজির

$
0
0

টানা ১৮ বছর ধরে কখনও হর্ন বাজাননি তিনি৷ অসহিষ্ণু পৃথিবীর বুকে , কে এই একবিংশ শতাব্দীর আশ্চর্য মানুষ?

সেই বিরল কীর্তির কারণেই , আজ তাঁকে সম্মান জানানো হবে৷ কিন্ত্ত কীভাবে ১৮ বছর হর্ন না বাজিয়ে গাড়ি চালালেন? লিখছেন সুমিত দে

ছোট্ট একটা খবর৷ ‘পাটুলির ‘মানুষ মেলা ’য় শনিবার সন্ধ্যায় পুরস্কৃত করা হবে দীপক দাসকে৷ কারণ ? ব্যস্ত শহর কলকাতার বুকে প্রতিদিন গাড়ি চালালেও , টানা ১৮ বছর ধরে কখনও হর্ন বাজাননি তিনি৷ অসহিষ্ণু পৃথিবীর বুকে , কে এই একবিংশ শতাব্দীর আশ্চর্য মানুষ ? সন্ধান পেতে হাজির হয়েছিলাম পাটুলির কাছের মেট্রো স্টেশন , ‘ক্ষুদিরাম ”-এ৷ দীপকবাবুর কীর্তি-কথা শুনে অবাক , স্টেশন মাস্টার শুভাশিস বিশ্বাস৷ ‘এমন মানুষ এখানে আছেন ! জানি না তো ! যদি তাঁর দেখা পান , আমার স্যালুট জানাবেন৷ ’ অগত্যা সাইকেল রিকশা চেপে , গন্তব্য পাটুলি থানা৷ শরণাপন্ন হতে হল থানার ওসি অভিজিত্ ঘোষের৷ দীপকবাবুর কথা শুনে তাঁর বক্তব্য , ‘ওনার গাড়ির হর্ন খারাপ না তো ?” খারাপ হলেও , তা ১৮ বছর ধরে ? ‘এমন মানুষের কথা তো আমার জানা নেই৷ জানতে পারলেই , আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে৷ ’ ব্যর্থ হয়ে থানার গেটের সামনে আসতেই , এগিয়ে এলেন এক পুলিশকর্মী৷ ‘বলছি কী , থানায় ‘মানুষ মেলা ’র লেটার হেডে একটা চিঠি জমা রয়েছে৷ দেখুন , ওতে যদি মেলা -উদ্যোক্তার নাম -ফোন নম্বর পেয়ে যান৷ ’ তাঁর কথা মতোই ফাইলের চিঠিতে পাওয়া গেল মেলা -উদ্যোক্তা সৈকত সরকারের নাম , নম্বর৷ তাঁর কাছ থেকেই জোগাড় হল দীপকবাবুর নম্বর৷

ফোনে ধরতেই দীপকবাবু জানালেন , ‘আমি তো ডিউটিতে৷ আপনার ওইদিকেই যাচ্ছি৷ আধঘণ্টার মধ্যে মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারির সামনে আসতে পারবেন ? যেতে যেতে কথা হবে৷ ’ সেই মতোই দাঁড়ালাম৷ ঠিক সময়েই নিঃশব্দে এসে দাঁড়ালো রুপোলি ওয়গন -আর৷ গাড়ির ভিতর থেকে হাসিমুখে হাত নাড়লেন , বছর ৫২ -র দীপকবাবু৷ ‘চলুন বাড়ি৷ ওখানে বসে কথা সেরে, তারপর যাব৷ ’ কথামতো গাড়িতে বসা গেল৷ তাঁর ফ্ল্যাটের সাদা দরজায় কোনও নাম নেই!

সাঁটা এক রাক্ষসের ছবি , লেখা ‘শব্দরাক্ষস’৷ ঘরের ইতিউতি সাঁটা পোস্টার ‘ডু নট হঙ্ক ইয়োর হর্ন‘, ‘হর্ন ইজ আ কনসেপ্ট , আই কেয়ার ফর ইয়োর হার্ট..... দীপক৷ ’ স্ত্রী রীতা , কন্যা অমৃতাকে নিয়ে দীপকবাবুর ছোট্ট সংসার৷ বসার ঘরে ছোট এক বুক-সেলফ৷ তাতে ভর্তি বই৷ বেশ কিছু কবিতার৷ কবিতা ভালোবাসেন বুঝি ? ‘একটু-আধটু লিখিও৷ এই কবিতার জন্যই তো আজ আপনি এখানে৷ ’ লাজুক হাসিতে জানালেন দীপকবাবু৷ তার মানে ? ‘মানে , এই যে গাড়ি চালাতে হর্ন বাজাই না , শব্দ করি না , সেটা তো কবিতার জন্যই৷ ’ কী রকম ? ‘২০০০ সালে মেয়ে হয়৷ তখন নিজের একটা সুমো ছিল৷ তার আগের কথা , কী বলি ? বারো ক্লাস অবধি পড়ে, লেখাপড়া ছেড়ে দিই৷ এক সময় সাইকেল চালিয়ে, লোকের বাড়ি বাড়ি কাগজ দিয়েছি৷



ময়দান মেট্রো রেলে হেল্পারের কাজ করেছি৷ মামা গাড়ি চালাতে , তাঁর কাছে গাড়ি চালানো শিখে , ৫ ডিসেম্বর ১৯৯১ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাই৷ তারপর টুকটাক এর-তার গাড়ি চালিয়ে, ধার করে একটা সুমো কিনি৷ সেটাই চালাতাম৷ ১০-১২ বছর টেনেছি৷ কিন্তু ধার ঠিকমতো শোধ করতে না পারায় , বছর দু’য়েক হল সেটা একজনকে দিয়ে, এখন একজনের এই গাড়িটা চালাই,’ বলছিলেন দীপক৷

যোগ করলেন , ‘এক প্যাসেঞ্জারকে নিয়ে গল্ফ গ্রিন গেছি৷ তাঁকে ছেড় , ওখানে একটা গাছের নীচে বসে , একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম৷ তখন বাচ্ছাদের স্কুল ছুটি হয়েছে৷ চারিদিকে শুধু গাড়ি৷ বিকট হর্নের শব্দ৷ কে আগে যাবে! শব্দবাজি তো ৬৫ ডেসিবেলের বেশি হবে না জানি , কিন্তু হর্নের শব্দ ? কত ডেসিবেল অবধি ? জানি না৷ ওই বিকট শব্দের মাঝেই বসে পড়ছিলাম , জীবনানন্দ দাশের একটা কবিতা৷ সেখানে একটা লাইন ছিল , ‘এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্ণে শান্তি আসে মানুষের মনে৷ ‘ এই লাইনটাই যে কীভাবে মনে গেঁথে গেল ! সেই মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম , আজ থেকে কিছুতেই আর হর্ন বাজাব না৷ শব্দ করব না৷

সেই শুরু৷ তারপর আজ অবধি জীবনে হর্ন বাজাইনি৷ গাড়ি থেকে হর্ন খুলেই দিয়েছিলাম৷ ‘বলেন কী ! অসুবিধে হইনি ? ‘না ! কীসের অসুবিধে ! হর্ন না বাজিয়ে , গাড়ি নিয়ে কোথায় না গেছি ? সুন্দরবন , শিলিগুড়ি , সেখান থেকে মিরিক হয়ে বাঘমুন্ডি ! ননস্টপ ন ’ঘন্টা গাড়ি চালিয়েছি৷ গাড়িতে হর্নই নেই৷ ’ তা হলে গাড়িতে হর্ন থাকে কেন ? ‘ভগবানই জানেন ! আপনি ঠাকুর নমস্কার করেন কেন ? জানেন ? সে রকমই৷ সকলে জানেন , গাড়িতে হর্ন থাকলেই বুঝি বাজাতে হয়৷ আমি ওই সকলের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি৷ আসল কথাটা কী জানেন ? টাইম , স্পিড অ্যান্ড স্পেস৷ এটা ঠিক না থাকলে , গাড়ি কেন জীবনও ঠিক চলবে না৷ আর এই তিনটেকেই বাঁধতে হয় ধৈর্য্য দিয়ে৷ তা হলেই সব সম্ভব৷



লোকে আগে আমাকে ‘পাগল ’ বলতো৷ আজ তারাই সম্মান করে৷ তাদের দেখিয়ে দিয়েছি , সাধনা দিয়ে সব সম্ভব৷ জানেন , স্টেট ব্যাঙ্কের একজন একবার গাড়িতে উঠেছিলেন৷ নেমে যাওয়ার সময় , নম্বর নিয়েছিলেন৷ বেশ কয়েকদিন পর , হঠাত্ একদিন ফোন করে ওনাদের হেড অফিসে যেতে বলেন৷ গিয়ে দেখি , সেখানে একটা সাদা বোর্ডে লেখা , ‘শব্দদূষণ নিয়ে বক্তব্য রাখবেন গাড়িচালক দীপক দাস৷ ’ বক্তব্য রেখেছিলাম৷ তবে সেই দিনটার মতো আনন্দ , জীবনে পাইনি৷ আজও ভাবি , সরকারি , প্রশাসনিক মহল থেকে যদি একটু সুযোগ পেতাম , তা হলে কলকাতা শহরকে কীভাবে শব্দমুক্ত বানাতে হয় , সেটা করে দেখাতাম৷ কথায় না , কাজে৷ ’কিন্তু হর্ন না বাজানোয় , ব্যস্ত সওয়ারির কোনও সমস্যা হয়নি ? ‘না৷ এমন আদেশ দু’-একবার এসেছিল৷ কিন্তু তাঁদের হাত জোড় করে বলেছি , আমায় কোনও টাকা দিতে হবে না৷ প্লিজ , অসুবিধে হলে নেমে যান৷ আমার গাড়ি কোনও শব্দ করবে না , সরি৷ কেন অকারণ এত শব্দ বলতে পারেন ? এই তো আমার মেয়ে ক্লাস টুয়েলভে পড়ে৷ সাইকেল চালিয়ে পড়তে যায়৷ ওর সাইকেলে কোনও বেলই নেই৷ অতটুকু মেয়ে কী করে চালাচ্ছে ? আসলে শব্দ করলেই শব্দ , না করলেই নয়৷ ” তা আপনার বাড়ির দরজায় বেল বাজে তো …নাকি ? ‘এইটা ভালো বলেছেন৷ হুম , বেল একটা আছে বটে , তবে ওটাকে এবার সরাবো৷ ওটা খুলে , মাটির একটা ঘণ্টার ব্যবস্থা করব৷ এই নতুন বছরেই …দেখি৷ ’



ছবি ও ভিডিও: অতনু বিশ্বাস

কলকাতার আকাশে আজ আলোর আতশবাজি

$
0
0

না, সে কোনও জাগতিক আতশবাজি নয়৷ লিখছেন পীযূষ আশ

আকাশ পর্যবেক্ষকদের জন্য সুখবর৷ সুখবর তাদের জন্যও যাঁরা দিনে কিছুক্ষণ অন্তত আকাশপানে তাকান৷ আর যাঁরা এই দুই দলে পড়েন না , তাঁরাও আজ , বুধবার রাত দশটার পর চোখ রাখতে পারেন অন্তরীক্ষে৷ জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের আশ্বাস , রাতভর আকাশে আলোর আতশবাজি দেখা যাবে৷ না , ফানুস নয় , ক্রিকেট জয়ের ফায়ারওয়ার্কস নয় , এই আতশবাজির উত্স একেবারেই মহাজাগতিক৷ উল্কাবৃষ্টি৷ এম পি বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি জানালেন , ‘জেমিনিড মিটিওর শাওয়ার বা মিথুন রাশির উল্কাবৃষ্টি দেখার সুযোগ রয়েছে ১৩ ডিসেম্বরের রাত থেকে৷ চলবে ভোর পর্যন্ত৷ মহাজাগতিক এই ঘটনা দেখার জন্য টেলিস্কোপ বা বায়নোকুলারের প্রয়োজন নেই৷ খালি চোখেই তা দেখা সম্ভব৷ ’

জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি ?
মহাকাশে ভাসতে থাকা পাথরের টুকরো , ডাস্ট পার্টিকেল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কাছাকাছি এলে , সেগুলো meteoroids বলে উল্লেখ করা হয়৷ আর তা যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ে , অভিকর্ষের টানে মাটির দিকে নেমে আসে , তখন meteors৷ বাংলায় দু’টোর আলাদা পরিভাষা নেই৷ দু’টোকেই আমরা উল্কা বলি৷ প্রচণ্ড গতিবেগে পৃথিবীর টানে নেমে আসার দরুণ এই মহাজাগতিক বস্ত্তকণা বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে জ্বলতে থাকে৷ রাতের আকাশে এগুলোই দৃষ্টিগোচর হয়৷ আমরা বলি উল্কাপাত৷ অনেক সময় ধূমকেতুর প্রদক্ষিণপথ আর পৃথিবীর কক্ষপথ কাছাকাছি চলে আসে৷ ধূমকেতুর ধূলিকনা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে মাটির বুকে নেমে এলে , আকাশের বুকে রাশি -রাশি উজ্জ্বল দাগ দেখা যায়৷ সেটাই উল্কাবৃষ্টি৷ জেমিনিড মিটিওর শাওয়ার নামটা এসেছে জেমিনি নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে৷ এই মহাজাগতিক বস্ত্তপিণ্ড অবশ্য ধূমকেতু নয়৷ একটি গ্রহাণু৷ নাম ‘ফিথন ৩২০০ ’৷ আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৮৩ সালে৷ এমন গ্রহাণু সৌরজগতে লক্ষ -লক্ষ আছে৷ মঙ্গল আর বৃহস্পতির মধ্যবর্তী এলাকায় এরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে৷ এই এলাকা অ্যাস্টরয়েড বেল্ট নামে পরিচিত৷ গ্রহাণুর কক্ষপথ খুবই উপবৃত্তাকার৷ ফলে তা কখনও পৃথিবীর প্রদক্ষিণপথের কাছে চলে আসে৷ আজ রাতে এমনই একটা ঘটনা ঘটবে৷

কোথায় যাবেন দেখতে
ফাঁকা জায়গায় যেতে হবে৷ যেখানে শহরের আলো কম৷ বাইপাস ছাড়িয়ে ভাঙড়ের দিকে যেতে পারেন৷ অথবা ডায়মন্ড হারবারের আশপাশের এলাকা৷ উত্তরবঙ্গে ফাঁকা এলাকাও আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত৷ তবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকতে হবে৷ না হলে উল্কাবৃষ্টি দেখতে না পাওয়ারই আশঙ্কা ষোলোআনা৷

চুম্বনহীন জীবনে গোঁফ যাবে না চুরি

$
0
0

হাজরা মোড়ের এক বার-এর গেটে তাঁর ডিউটি৷ গোঁফের জন্য৷ তার পরিচর্চায় তাই কোনও সমঝোতা করেন না৷ লিখছেন সুমিত দে

'গোঁফকে বলে তোমার আমার, গোঁফ কি কারও কেনা?'

'গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, গোঁফ দিয়ে যায় চেনা৷'

না, সুকুমার রায় পড়েননি তিনি৷ 'গোঁফ চুরি' কবিতার কথাও জানেন না, বছর ৫৫-র কার্তিক দে৷ তাঁর তেমন কোনও মাথার 'ব্যামো'ও নেই৷ রয়েছে শুধুই শখ৷ যার জন্য বড় সাধের গোঁফ জোড়া নিয়ে কেউ কিছু বললেও, সে কথায় কোনও তাপ-উত্তাপ নেই তাঁর৷ বেজায় শান্ত কার্তিকবাবুর কথায়, 'কে, কী বলল, তাতে কী এসে গেল! আমার শরীর, আমার শখ৷ আমার গোঁফ, আমার সাধ৷ তাতে কার কী? আমার সাফ কথা, এই গোঁফ নিয়েই আমায় ভালো লাগলে এসো, না লাগলে আসো৷ গোঁফের জন্য আমি কোনও আপোশে নেই৷ এই গোঁফ কি আজকের? এ আমার ২৫ বছরের সাধনা৷ আজ এর জন্য স্ত্রী-সংসার সব ছাড়তে পারি৷ কিন্ত্ত গোঁফকে কি-ছু-তে-ই ছাড়ব না৷'

কিন্ত্ত জীবনে এত ধরনের শখ থাকতে, হঠাত্ গোঁফ রাখা নিয়ে এমন শখ? প্রশ্ন শুনে, কার্তিকবাবুর গোঁফের ফাঁকে এক চিলতে হাসি, 'হঠাত্ই বলতে পারেন৷ তখন সবে ছেলে হয়েছে৷ পাড়ার সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে গিয়ে, সেলুনের সুভাষ গোঁফটা একটু বড় রেখে বলল, 'বেশ মানিয়েছে গো তোমাকে৷' দেখলাম, সত্যিই তো! ব্যস, সেই যে গোঁফের প্রেমে পড়লাম, আর সেই প্রেম কাটিয়ে উঠতে পারলাম না৷ আজ বউকে যা সময় দিই, তার চেয়েও ঢেড় বেশি সময় দিই গোঁফকে৷ জানেন, কত সেবা-যত্ন করি?'

গোঁফের সেবা-যত্ন! কী রকম? 'তার মানে! কারও প্রেমে পড়েছেন, আর তাকে যত্ন করবেন না! ভালোবাসবেন না! এ কী কথা! জানেন, প্রতিদিন স্নান করতে গিয়ে, গোঁফের জন্যই ৩০-৪০ মিনিট সময় যায়৷ সাবান-শ্যাম্পু-তেল-কন্ডিশনার দিয়ে, কত যত্ন করে ধীরে ধীরে সব পরিষ্কার করতে হয়৷ শুধু, শুধু কি আর এমন গোঁফ হয়! এই গোঁফ ঠিক রাখতে, প্রতিদিন খরচ ২০ টাকা৷ শুধু গোঁফের জন্যই, আমার তিন ধরনের চিরুনি রয়েছে৷ সরু-মাঝারি-বড় দাঁতের৷ তাতে চিরুনির ফাঁকগুলো আলাদা হয়৷ সুন্দর আঁচড়ানো যায়৷ আসলে এত যত্ন নিই কেন জানেন? এই গোঁফই আজ আমায় সব কিছু দিয়েছে৷'

'সব কিছু দিয়েছে' মানে? 'কী দেয়নি! উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার, পাট্টাবগা গ্রামের লোক আমি৷ তিন ভাই, এক বোনের সংসারে, ছোট থেকে অভাব দেখেই বড় হয়েছি৷ ক্লাস টু পর্যন্ত পড়ে, লেখাপড়া ছেড়ে দিই৷ একটু বড় হতে, মাঠে চাষের কাজ করতাম৷ তার পর চালের ব্যবসা৷ চলল না৷ ক'টা গরু কিনে, খাটাল বানালাম, সেটাও জমল না৷ বাড়ি তৈরির মিস্ত্রির কাজ করলাম৷ কিন্ত্ত কিছুতেই কিছু করে উঠতে পারিনি৷ শেষে একজনের সাহায্যে হাবরার একটা বার-এর গেটে দাঁড়ানোর কাজ পাই৷ ততদিনে বড় হচ্ছি, সঙ্গে গোঁফও৷ দেখতাম, অনেকেই চেয়ে চেয়ে দেখছেন৷ এই করতে করতেই, কাজের সুযোগ পাই কলকাতায়৷ হাজরা মোড়ের এক বার-এর গেটের ডিউটি৷ মালিকের দেখলাম আমায় পছন্দ তো হলই, সঙ্গে আমার গোঁফও৷ সে আজ ১২ বছর আগের কথা৷ সেই এক যুগ ধরে, আমি এই বার-এর গেটে৷ কত মানুষের সঙ্গে পরিচয়! কতজন ড্রিঙ্ক করে যাওয়ার সময়, জড়িয়ে ছবি তোলেন৷ বকশিস দেন৷ একজন তো একবার ৫০০ টাকা হাতে দিয়ে বলেছিলেন, 'গোঁফের যত্ন নিও৷ এটা কিছুতেই নষ্ট করো না৷' জানেন, এই গোঁফের জন্য আমার ছবি আজ আমেরিকা-ইংল্যান্ড-চিন-জাপান-অস্ট্রেলিয়া… সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গিয়েছে!' কী করে! 'সামনেই তো কালীঘাট মন্দির৷ দেশ-বিদেশের কত মানুষের আনাগোনা৷ পথে যেতে দেখলেই, তাঁরা আমার সঙ্গে ছবি তুলে নিয়ে যান৷ এই করেই… এই গোঁফের জন্য তো অভিনয়ের সুযোগও পেয়েছিলাম৷'

গোঁফের জন্য অভিনয়? 'হ্যাঁ৷ বছর পাঁচেক আগে ধর্মতলার এক হোটেলের গেটে আমাকে ইউনিফর্ম পরে দাঁড়াতে হয়েছিল, শু্যটিং করতে৷ ছবিটার নাম 'রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার'৷ জিত্ ছিলেন হিরো৷ আধ ঘণ্টার শু্যটিংয়ের জন্য, সেদিন আমায় ১৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল৷ আর একবার বাইপাসের ধারে, একটা মোবাইল কোম্পানির অ্যাডের জন্যও শু্যটিং করেছিলাম৷'

আপনি বীরাপ্পনের নাম শুনেছেন? 'শুনব না! তবে উনি নামে আমার থেকে বড় হতে পারেন৷ কিন্ত্ত গোঁফে আমি ওনার থেকে বড়৷ আমার গোঁফ দেড় ফুট, মানে ১৮ ইঞ্চি৷' অমিতাভ বচ্চনের 'শরাবী' ছবিটা দেখেছেন? 'ওই 'মুচে হো তো নাত্থুলাল জ্যাইসা হো'… ওই ডায়ালগটার কথা বলছেন তো? ছেলেপুলেরা ড্রিঙ্ক করে বেরনোর সময়,আমার গোঁফ দেখে মজা করে যখন এই ডায়ালগ দেয়, বেশ রাগ হয়৷ আরে! গোঁফ কি তাচ্ছিলের জিনিস নাকি! এমন মজা-মস্করা মানতে পারি না৷ এই নিয়েও কত কাণ্ড হয়েছে৷'

কেন! কী হয়েছে? 'আরে! বাড়িতে বউ কম অশান্তি করেছে নাকি? আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, গোঁফ-সমেত যদি আমায় ভালোবাসতে পারো, ভালোবাসো, নয়তো আমায় ছেড়ে দাও৷ আরে, এসেছি একা, যাব একা৷ কীসের অত চিন্তা! আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায়, কাউকে কিছুতেই হাত দিতে দেব না৷ যার জন্য ওদের সঙ্গে কোনও অনুষ্ঠান-বাড়িতেও যেতে চাই না৷ মার্কেটিংয়েও যাই না৷ জোর করে নিয়ে যায়৷ কিন্ত্ত গিয়ে দেখি উল্টো সিন৷ সকলে আমার সঙ্গেই ছবি তুলতে চায়! কী বলবেন! আসলে ওরা জানেই না খনার বচন, 'গোছে ধান, গোঁফে মান৷' বুঝলেন?'

আপনার বাড়িতে কে কে আছেন? 'বউ, ছেলে, মা, দুই দাদা, তাদের ছেলেরা৷ একেবারে যৌথ পরিবার৷' কিন্ত্ত মা তো একদিন মারা যাবেনই, তখন গোঁফ কাটবেন না? 'না-না মাথা খারাপ! সে অনুমতি আগেই মায়ের থেকে নিয়ে রেখেছি৷ ২৫ বছর চুমুই তো খেলাম না৷'

ছবি: অতনু বিশ্বাস


সঙ্গী বাইক, বিনে পয়সার হাসপাতাল ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা’র

$
0
0

সম্মান নিতে এসে ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি নাকি তাঁকে বলেছিলেন, ‘ম্যায় গেন্দসে খেলতা হু, তুম জানসে৷ ‘সম্মান’ নিতে এক রাতের জন্য, কলকাতা ঘুরে গেলেন করিমুল হক৷ ‘পদ্মশ্রী’-প্রাপ্ত ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা’-র গল্প শুনলেন সুমিত দে৷

যে বাড়িতে একদিন খেতে বসে, কারও মুখে ভাত জুটত না৷ যে বাড়িতে একদিন বিপদে ছুটে যেতে একটা সাইকেল মিলত না৷ যে বাড়িতে একদিন প্রয়োজনে কোনও যান না পাওয়ায়, সারা রাত ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছেন বাড়ির কর্ত্রী৷ জলপাইগুড়ির মালবাজার এলাকার, ধোলাবাড়ি গ্রামের সেই বাড়িতেই , আজ প্রতিদিন খেতে পায় গ্রামের জনা পনেরো প্রতিবন্ধী মানুষ! সেই বাড়িতেই আজ পুরনো জামাকাপড় নিতে ভিড় করে এলাকার নিঃস্ব মানুষজন! সেই বাড়িতেই আজ এলাকার সকলের সেবায় , সর্বক্ষণ মজুত থাকে অক্সিজেন , ফার্স্ট এড ক্লিনিক৷ দুই , তিন , চার চাকার তিন -তিনটি অ্যাম্বুলেন্স !

সেই বাড়ি-সংলগ্ন এক বিঘা জমিতেই আজ গড়ে উঠতে চলেছে তিনতলা হাসপাতাল ! বিনা পয়সার চিকিত্সা কেন্দ্র …‘মানব সেবা সদন’! প্রায় কুড়ি বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় , তিলে তিলে এক অলীক স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছেন যিনি , তাঁর নাম করিমুল হক৷ বছর ৫৩-র যে মানুষটিকে আজ সকলে একডাকে চেনেন , ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা ’ নামে৷ করিমুলের এমন কীর্তির কারণে , গত মার্চ মাসে তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে গ্রহণ করেছেন ‘পদ্মশ্রী ’ সম্মান৷ তাঁর কথায় , অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন , তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন , কিন্ত্ত ‘পদ্মশ্রী ’ হতে পারেননি৷ সেদিন একই সঙ্গে ‘পদ্মশ্রী ’ হুত খুব৷ ’ টেলিভিশনের ‘দাদাগিরি ’ অনুষ্ঠানেও দু’-দু’বার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে এসেছেন তিনি৷ মুম্বইয়ে ‘সারেগামা ’ অনুষ্ঠানে নেহা কক্কর তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন ১ লাখ টাকার চেক ! করিমুলের কথায় , ‘মানুষের ভালোবাসা , সাহায্য আজ অনেক পেয়েছি৷ য াঁরা ‘মানুষ ’, তাঁরা ঠিক এগিয়ে এসেছেন৷ তাঁদের সহযোগিতাতেই তো আমার আজকের এই পথচলা৷ সকলের ভালোবাসা না পেলে , আজ এতদূর আসতে পারতাম ? জানেন , মানুষের ভালোবাসায় আজ আমার ঘর ভর্তি স্মারক -সম্মান৷ কত সার্টিফিকেট ! কত পুরস্কার ! এ বছর জলপাইগুড়ি -ধূপগুড়ি -ময়নাগুড়ি -শিলিগুড়ির ১৭টা দূর্গাপুজোর ফিতে কেটেছি৷ প্রতিমাকে দেখতে দেখতে মায়ের কথা বড্ড মনে পড়ে যায়৷ ’ সালটা আজও কিছুতেই ভুলতে পারেন না করিমুল৷ ১৯৯৫৷ আজ থেকে প্রায় ২২ বছর আগের ঘটনা৷ তা-ও যেন চোখের সামনে , ছবির মতো পরিষ্কার৷ রাত তখন এগারোটা৷ হঠাত্ই যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন মা জফুরানদেবী৷ অত রাতে , কী ভাবে মাকে নিয়ে যাবেন হাসপাতাল ! নিউ জলপাইগুড়ির ধোলাবাড়ি গ্রাম থেকে , জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল , প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পথ৷ জঙ্গলঘেরা সেই পথে , অত রাতে যানবাহন কোথায় ! তা-ও দাদাকে সঙ্গে নিয়ে , সেই রাতেই করিমুল ছুটে বেড়িয়েছেন , গ্রামের এ -প্রান্ত থেকে ও -প্রান্ত৷ যদি কোনও যান মেলে৷ কিন্ত্ত মেলেনি৷ চোখের সামনে ছটফট করতে করতেই ভোররাতে মারা যান জফুরাদেবী৷ চোখের সামনে দেখা মায়ের সেই মৃত্যুই , চোখ খুলে দিয়েছিল তাঁর৷ সেইদিন থেকে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন , গ্রামের আর কাউকে কখনও হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে , বাড়িতে পড়ে থেকে মরতে দেবেন না৷

সেই শুরু৷ সেই থেকে আজ অবধি এলাকার কাছে -দূরের প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি রোগীকে , গ্রাম থেকে হাসপাতাল পৌঁছে দিয়েছেন তিনি ! লাটাগুড়ির চা -বাগানে কাজের সূত্রে , ম্যানেজারের কাছ থেকে শিখে নিয়েছিলেন বাইক চালানো৷ তারপর কখনও কারও থেকে বাইক চেয়ে , কখনও ভ্যান রিকশা , বাসে চাপিয়েই তিনি গ্রামের নানা প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের নিজ দায়িত্বে নিয়ে গিয়েছেন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল৷ বাঁচিয়ে তুলেছেন হাজারো মুমূর্ষ রোগীকে৷

মৃতপ্রায় মানুষকে বাঁচিয়ে তোলার নেশা এমনই পেয়ে বসে তাঁকে , এরপর ২০০৭ সালে করিমুল ঋণ নিয়ে , কিনে ফেলেন একটি মোটর বাইক৷ আর তাতে ঝুলিয়ে দেন ‘অ্যাম্বুলেন্স ’ লেখা বোর্ড৷ রোগী নিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা ছুটে বেড়ানো সেই ‘বাইক অ্যাম্বুলেন্স ’ দেখতে দেখতে আজ তিনি একডাকে খ্যাত ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা ’ নামে৷ কিছুদিন হল ৬ ফুট বাই ২ ফুট একটা কাঠের বাক্স বানিয়ে , জুড়ে দিয়েছেন সেই বাইকের সঙ্গে৷ করিমুলের কথায় , ‘সবাই তো গরিব৷ দেখতাম হাসপাতালে মারা গেলে , ওরা আর সেই লাশ হাসপাতাল থেকে এত দূরের গ্রামে ফের উজিয়ে না এনে , ওইদিকেই কোথাও পুঁতে দিত৷ একবার একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গিয়েছিল৷ তার বাপও তাই করেছিল৷ গ্রামে আসতে দেখি , মেয়ের মায়ের সে কী কান্না৷ ‘মেয়েটাকে একবার চোখের দেখা দেখতে দিলে না৷ এ কী করলে !’

দেখে খুব খারাপ লেগেছিল৷ অনেকে তো মানতে চায় না৷ আসলে সত্য -মিথ্যা , সবই তো এই ৪ আঙ্গুলের খেলা৷ এই দেখুন না , কান থেকে চোখ , মাত্র ৪ আঙুল৷ কিন্ত্ত কানে শোনা এক কথা , আর চোখে দেখা আরেক৷ তাই সেদিনই ঠিক করলাম , হাসপাতাল থেকে বাড়ির লোকদের দেখাতে ‘বডি ’ গ্রামে নিয়ে আসবই৷ তাই নিজে হাতে বানিয়ে ফেলি মৃতদেহ আনার একটা কাঠের বাক্স৷ সেটাই জুড়ে দিয়েছি বাইকের সঙ্গে৷ ’দু’-চাকার বাইকে রোগী নিয়ে যেতে অসুবিধে হত না ? কথা শুনে হেসে ফেলেন করিমুল৷ ‘দু’-চাকার গাড়িই তো আমার আসল ‘অ্যাম্বুলেন্স ’! তিন চাকা , চার চাকার অ্যাম্বুলেন্স তো সবে পেলাম৷ যে কোনও লোকের সমস্যায় , তাকে বাইকে নিয়ে হাসপাতাল ছুটেছি৷ আমার ‘অ্যাম্বুলেন্স ’-এ সবসময় মজুত অক্সিজেন , স্যালাইন , ফার্স্ট-এড বক্স৷ শিলিগুড়ির এক সার্জেনের থেকে সেলাই করাও শিখে নিয়েছি৷ রোগীদের স্টিচ -ওয়াশ সব তো আমিই করি৷ শিলিগুড়ির সিটি মার্কেটে ৯০ জন ডাক্তার , কোচবিহারে ৭০ জন ডাক্তার , জলপাইগুড়ির ডাক্তাররা সকলে আমায় মালা পরিয়েছেন৷ সম্মান দিয়েছেন৷
সকলেই আমায় খুব সাহায্য করেন৷ আজ আমার দুই ছেলেই অ্যাম্বুলেন্স চালায়৷ কোনও মহিলা রোগীর দরকারে আমার স্ত্রী সেবা করে৷ সকলের সহযোগিতাতেই আজ আমার জীবন সার্থক৷’এরপর স্বপ্ন কী ? একটু থামলেন করিমুল৷ ‘স্বপ্ন? হাসপাতালটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলা৷ বাড়ির এক বিঘে জমির মাঝে , জোরকদমে কাজ চলছে৷ তিনতলার হবে৷ সেখানে থাকবে ডাক্তার৷ ফার্স্ট এড , স্যালাইন , অক্সিজেন-সব কিছুর ব্যবস্থা৷ যার কেউ নেই , তার থাকার জায়গা৷ ১৫ জন প্রতিবন্ধী যাদের রোজ খেতে দিই , তারা থাকবে উপর তলায়৷ ৬-৭টা বেডও থাকবে , জরুরি প্রয়োজনের জন্য৷ এ ছাড়া যাঁরা জলপাইগুড়ি বেড়াতে আসেন , তাঁরা টাকা খরচ করে হোটেলে উঠবেন কেন ? তাঁরাও ক’দিনের জন্য থাকবেন আমার ওখানে৷ তার জন্য থাকবে ঘর৷ ’সেই ঘরের ভাড়া ? প্রশ্ন শুনে আঁতকে উঠলেন করিমুল৷ ‘ভাড়া মানে টাকা! না -না , সমস্ত ফ্রি৷

করিমুল যেখানে টাকা নেই সেখানে৷ তা হলে আর আমি মানবসেবা করলাম কী !’

শহরের শরীরের রঙের ছোঁয়া

$
0
0

শহর জুড়ে গ্রাফিটি৷ কখনও অ্যাবস্ট্রাক্ট আবারও কখনও বিশেষ কোনও চেহারা৷ রয়েছে আলপনাও৷ গ্রাফিটির ট্রেন্ড দেখলেন দেবলীনা ঘোষ মুখোপাধ্যায়৷ ক্যামেরায় সাত্ত্বিক পাল

পার্ক স্ট্রিটের জমজমাট রাস্তা৷ পার্ক হোটেলের দু'পাশের দেওয়াল৷ ক্রিসমাসের সাজগোজ, দু'পাশের নানা সটলের মধ্যেও নজর যাবে সবার প্রথমে দেওয়ালেই৷ কারণ একটাই৷ সেই দেওয়াল জুড়ে রয়েছে বর্ণময় গ্রাফিটি৷ রঙের বাহার, আঁকার কারুকার্য অন্য কোনওদিকে দৃষ্টি ফেরাতেই দেবে না৷ শুধু পার্ক স্ট্রিট নয়, খিদিরপুর, গল্ফগ্রিন, পার্ক সার্কাস, হাজরা---শহর ছেয়ে যাচ্ছে স্ট্রিট আর্ট আর ওয়াল আর্টে৷ শহুরে এই ট্রেন্ড একদিকে যেমন সৌন্দর্যায়নের কাজ করছে, তেমনই কর্মসংস্থানেও সাহায্য করছে৷

হঠাত্ করে ওয়াল আর্টের এই বাড়বাড়ন্ত কেন? বিভিন্ন রঙের সংস্থাও বা কেন স্পনসর করছে এই গ্রাফিটি? প্রশ্নের উত্তরে দেশের এক প্রথম সারির রং প্রস্ত্ততকারক সংস্থার মুখপাত্র জানান, 'শুধু কলকাতা নয়, সারা ভারত তথা সারা বিশ্বেই ওয়াল আর্ট বা স্ট্রিট আর্ট খুবই জনপ্রিয়৷ দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতেও এরকম প্রচুর গ্রাফিটি দেখতে পাওয়া যায়৷ আমরা অনেক সময় বিভিন্ন আর্ট কলেজের সঙ্গে টাই-আপ করি৷ আবার কখনও বা একজন শিল্পীকে এই কাজের ভার গিয়ে দিই৷ তারপর তাঁরা বিভিন্ন লোক নিয়ে এই কাজ সম্পন্ন করেন৷ দেওয়ালের মাপ, এলাকা অনুযায়ী আমরা একটা বাজেট স্থির করি৷ সেই এলাকার মুডের সঙ্গে যেন গ্রাফিটিটা যায় সে বিষয়েও খেয়াল রাখা হয়৷ সব শহরে যখন হচ্ছে তখন কলকাতার মতো একটা শিল্পসম্মত শহরে কেন হবে না ওয়াল আর্ট? এতে শহরকে সুন্দর করে তোলা হয়৷ সঙ্গে নিজেদের প্রচারও হয়, বলা বাহুল্য৷'

গণেশ হালদার, শিল্পী৷ শহরের বহু গ্রাফিটিতেই রয়েছে তাঁর তুলির টান৷ জানাচ্ছেন, 'আগে শুধু সাইন বোর্ড লেখার কাজ করতাম৷ বরাবরই আমি আঁকতে পারি৷ এক পরিচিতর সূত্রে কাজ পাই দেওয়ালে আঁকার৷ এক রং প্রস্ত্ততকারক সংস্থার হয়ে৷ তারপর সেই সংস্থা যেখানে যেখানে কাজ করেছে, আমিও কাজ পেয়েছি৷ আগে আমার সারা সন্তাহে আয় হতো ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা৷ এখন সেটাই বেড়ে প্রায় হাজার তিনেকে দাঁড়িয়েছে৷' নীলাঞ্জনা রায়, কোনও বিশেষ আর্ট কলেজের সঙ্গে যুক্ত নন৷ তবে আঁকতে ভালোবাসেন৷ সেই সূত্রেই নিয়মিত আঁকার ক্লাসে যাতায়াত৷ আর সেখান থেকেই রাস্তায় আলপনা আঁকার সুযোগ পান৷ 'প্রথমে পুজোর সময় আলপনা আঁকি রাস্তায়৷ তবে সেবার শুধুই রং ভরেছিলাম৷ নিজে কিছু আঁকিনি৷ পরে আবার ফুটবল ওয়ার্ল্ডকাপের সময় স্টেডিয়াম চত্বরে আবার আলপনা আঁকার সুযোগ পাই৷ সেবার নিজেও কিছু এঁকেছি৷ এরপর আবার রাসের সময় শান্তিপুরের রাস্তাতেও আলপনা আঁকতে যাই৷ ওখানেও বেশ কিছুটা এঁকেছি৷ তবে আমি সেভাবে কখনও টাকা চাইনি৷ পেয়েছি কিছু টাকা, তবে পুরোটাই অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য কাজ করেছি৷ ইচ্ছে আছে এককভাবে কোনও দেওয়ালে আঁকার৷ জানি না সেই সুযোগ কোনওদিন পাব কিনা'---জানাচ্ছেন তিনি৷

যে সব এলাকায় স্ট্রিট আর্ট বা ওয়াল আর্ট হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা খুশি কি? হরিশ মুখার্জি রোডের পুরনো বাসিন্দা পল্লব দত্ত৷ জানাচ্ছেন, 'ছোট থেকে এই এলাকায় রয়েছি৷ আমার বয়স ৫৮৷ পুরনো অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে৷ কিন্ত্ত দেওয়ালে এই আঁকা ঠিক ভালো লাগে না আমার৷ কী আঁকা হচ্ছে ঠিক বুঝতেও পারি না৷' কলেজে পড়েন রিক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ থাকেন যাদবপুরে৷ নিয়মিত পড়তে যান খিদিরপুর এলাকায়৷ জানাচ্ছেন, 'রোজ যাওয়া-আসার পথে খিদিরপুরের এই ওয়াল আর্ট দেখি৷ খুব পছন্দ আমার৷ আমি বনধুদের বলেঠিলাম এরকম কিছু কেন আমর যাদবপুর এলাকায় করি না৷ উদ্যোগও নিয়েছিলাম৷ ভেবেছিলাম স্টেনসিল দিয়ে আঁকবো৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত আর হয়ে ওঠেনি৷ তবে এরকম যদি আমার পাড়ার দেওয়ালে হয়, ভালোই লাগবে৷'

ওয়াল আর্ট, স্ট্রিট আর্ট শহরকে কতটা সুন্দর করে তুলছে সেই নিয়ে তর্ক চলতেই পারে৷ থাকতে পারে মতভেদও৷ কিন্ত্ত দেওয়াল বা রাস্তা ক্রমশ যে অন্যরকম সাজে সেজে উঠছে তাতে কিন্ত্ত কোনও সন্দেহ নেই৷


নতুন বছর সামলাতে প্রস্ত্তত প্রমীলা বাহিনী

$
0
0

নিশিনিলয়ে টলমল পা৷ উত্সবের রাতে উন্মাদনা সামলাতে তৈরি যারা , সেই লেডি বাউন্সারদের কথা লিখছেন সুমিত দে৷

‘ওরা টাফ , কিন্ত্ত রাফ নয়৷ ওরা অভদ্র কোনও মহিলাকে ঘাড় ধাক্কা দিতে পারে যেমন , তেমনই প্রয়োজনে কোনও বেহুঁশ মহিলাকে পরম মমতায় পৌঁছে দিতে পারে তাঁর গাড়িতে৷ ’ জানালেন সুজিত মজুমদার৷ বিধাননগর এলাকার এক বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থার আধিকারিক৷ যিনি বেশ কয়েক বছর ধরে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে -অনুষ্ঠানে প্রয়োজনে , সাপ্লাই দিয়ে চলেছেন এই মেয়ে বাউন্সারদের৷

এঁরা কোনও ভিন গ্রহের বাসিন্দা নন৷ এঁরা এই কলকাতা -আশপাশেরই মেয়ে৷ আর দশজনের মতোই স্বামী -পুত্র-রান্না নিয়ে সংসার সামলান৷ আবার উত্সব -অনুষ্ঠানে কাজ এলে , বেরিয়ে পড়েন ডিউটি দিতে৷ রেস্তরাঁ-ক্লাব -পার্টিতে মত্ত -উন্মত্ত মহিলাদের সামলাতে৷

যখন ‘জাগে ’ শহর৷ তখন এঁরা সজাগ৷ সদা প্রস্ত্তত৷ অচিরেই দিন না যেতে , নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্ত্তত ‘তিলোত্তমা নগরী ’৷ সেইমতো তৈরি এঁরাও৷ পার্ক স্ট্রিট -ধর্মতলা -সল্ট লেক -বাগুইহাটি -লেক টাউন -নিউ টাউন -সেক্টর ফাইভ …সারা কলকাতার হোটেল -রেস্তরাঁ-ক্লাব -নাইট ক্লাবের তরফে নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা৷ মুহুর্মুহু ডাক পড়ছে বিশেষ নিরাপত্তারক্ষী বাউন্সার ’-এর৷ ছেলে তো বটেই , মেয়ে বাউন্সারেরও !সুজিতবাবুর কথায় , ‘আজকাল ছেলে-মেয়ে বলে আলাদা কিছু নেই৷ বরং ছেলেদের থেকে , মত্ত মেয়েদের সামলানো অনেক সমস্যা৷ যার জন্য এই সময় মেয়ে বাউন্সার সাপ্লাই দিতে নাজেহাল অবস্থা হয়৷ এত চাহিদা , যোগান দিতে হিমসিম খাচ্ছি৷’

মেয়ে বাউন্সার মানে কী ? এঁরা কারা ? এঁদের কাজটা কী ? তাঁর কথায় , ‘এরা ঠিক সিকিউরিটি গার্ড নয় , যে শুধু দাঁড়িয়ে থাকাই ডিউটি৷ এরা ওদের থেকে উন্নত৷ এদের সাহস -শক্তি অনেক বেশি৷ মহিলা -সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে এরা অনেক সক্রিয় -সাবলীল৷ জিম -বডির এই মেয়েরা যে কোনও বেসামাল -বেহুঁশ মহিলাকে কব্জা করতে পারে অনায়াসে৷ ’‘সব সময় আর পারি কোথায় দাদা ?’ জানালেন দীপমালা রায়৷ মধ্য কলকাতার এক তারকা -হোটেলের নাইট ক্লাবের লেডি বাউন্সার৷ ‘এই তো সেদিন৷ মেয়েটা মাতাল হয়ে , কী কাণ্ডটাই না করল ! এখানে পড়ছে , ওখানে পড়ছে …ইস৷ ওকে যত ধরে তুলি , তত গালিগালাজ করে ! অথচ মুখে বলে , ‘তুমি না ঠিক আমার মায়ের মতো৷ ’ কী যে করি ! কত বয়স ? ১৯ -২০৷

বাড়িতে আমার ছেলেও তো ওই বয়সী৷ বারো ক্লাসে পড়ে৷ তাই যখন পেন্সিল হিল দিয়ে মেয়েটা আমার পেটে মারে , খুব ব্যথা লাগলেও ওকে মারতে পারিনি …মায়া লাগছিল৷ বড়লোক বাড়ির আদুরে মেয়ে …কী যে করে , বুঝি না !’‘ভদ্রমহিলার কাণ্ড দেখে আমি হাঁ! শুধু দেখি গান শুরু হলেই দু’হাতে ৫০০ টাকার নোট উড়িয়ে যাচ্ছেন ! ওনাকে সামলাবো , না টাকা ! মাটিতে পড়ে যাওয়া সেই সব টাকা জড়ো করে , জমা দিয়েছি ম্যানেজারকে৷ তারপর সেই মহিলাকে ধরে শুইয়েছি সোফায়৷ পরে জ্ঞান আসতে , স্যার ওনাকে টাকাগুলো ফেরত দেন ,’ জানালেন অদ্বিতীয়া বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মধ্য কলকাতার এক নামী নাইট ক্লাবের লেডি বাউন্সার৷ ‘আমার বাপেরবাড়ি হাসনাবাদ , শ্বশুরবাড়ি হাবড়ায়৷ বিয়ে হয়েছে ৮ বছর৷ ৭ বছরের ছেলে৷ বর কাজ করে ব্যাঙ্কে৷ দু’জনেই সময় দিতে পারি না৷ তাই ছেলেটাকে বড় করতে , রেখেছি মায়ের কাছে৷ কী করব ?’ রাতে চারদিকে এত আনন্দ -ফুর্তি, ডিউটি দিতে গিয়ে ছেলের কথা মনে পড়ে না ? অদ্বিতীয়ার চোখ ছলছল৷ ‘পড়ে না মানে ? কিন্ত্ত উপায় কী ? তাই ছুটি পেলেই ওকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাই৷ সানি দেওল , অক্ষয়কুমারের মারপিটের ছবি আমার দারুণ লাগে৷ ’ছোট থেকেই খো -খো , জিমন্যাস্টিকে দারুণ ছিলেন ব্যারাকপুরের শেফালি দাস৷ ‘আমার বিয়ে হয়েছে ১৬ বছর৷ ছেলে ১৪ , পড়ে ক্লাস টেনে৷ বরাবরই আমি চটপটে , ফিট৷ তাই পাড়ার পরিচিত এক ছেলে বাউন্সার যখন এমন কাজের কথা বলল , রাজি হয়ে গেলাম৷ সংসারে টাকারও তো দরকার৷ মনে আছে , প্রথম কাজ করি ‘স্বভূমি ’-তে৷ এক টিভি চ্যানেলের অডিশন অনুষ্ঠানে৷ তারপর দেখতে দেখতে ৫ বছরে কত ডিউটি করলাম৷ ওড়িশা গিয়েও কাজ করেছি ’ জানালেন শেফালি৷ ‘এই ডিউটির বেশ মজাও আছে৷ ডিউটি করতে গিয়ে আমি এক জুয়েলারি দোকানে অমিতাভ -জয়া বচ্চনকে দেখেছি৷ নজরুল মঞ্চে শাহরুখ খানকে দেখেছি৷ এরপর সলমনকে দেখলেই …’ বলতে গিয়ে হেসে ফেললেন শেফালি৷

‘জানেন , এই সব কথা ছেলেকে বলতে পারি না৷ ও ভাবে , মা বুঝি ওকে ছেড়ে খুব আনন্দ করছে৷ ওর জন্যই যে এই কাজ , কাজ না থাকলে বাড়ি বসে সেলাই করেও রোজগার করি , ও বেচারা কী বুঝবে ?’বোঝার বয়স ঠিক হয়নি , দোলন সূত্রধরের ছেলের৷ দোলনের কথায় , ‘আমার বিয়ে ৯ বছর৷ ছেলে ৮ , পড়ে ক্লাস থ্রি -তে৷ স্বামী মারা গেছেন আড়াই বছর৷ তার পর থেকেই এই কাজে৷ বোনের ননদ ছিল বাউন্সার৷ তার থেকেই সুযোগ পাই৷ ’ জিম করেন নিয়মিত ? ‘না -না , দরকার হয় না৷ এমনিতে খো -খো খেলে , গাছে চড়ে আমি একদম ফিট৷ তা ছাড়া আসল সাহস থাকে মনে৷ জানেন , একবার কালীঘাটের এক পুজো -প্যান্ডেল থেকে ডিউটি সেরে ফেরার সময় কতগুলো ছেলের মধ্যে একটা খুব অসভ্যতামি করছিল৷ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাকে চড় মেরেছিলাম৷ কী করতে পেরেছে ? কিচ্ছু না ’ তারপর কী হবে …ভেবে ভয় পান না ? ‘না৷ ভয় পাই একমাত্র ভগবানকে৷’ আর ভালবাসেন কাকে ? প্রশ্নের উত্তরে হেসে ফেললেন দোলন৷

‘সলমন খানকে৷ এখন তো পারব না , যা কাজের চাপ৷ একটু ছুটি পেলেই , ছেলেকে নিয়ে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায় ’দেখতে যাব ’সলমনকে যতখানি ভালবাসেন সুস্মিতা বোঢ়া , ঠিক ততখানিই ভয় পান আরশোলা -মাকড়শাকে৷ ৩০ বছরের সুস্মিতা কাজ করেন সিভিক পুলিশে৷ পাশাপাশি বাউন্সার পেশায় রয়েছেন ৪ বছর৷ বাবা -মা -দুই দাদার সংসারের একমাত্র মেয়ে , কাবাডি খেলেছেন রাজ্য -জেলা -জাতীয় স্তরে৷ ধোনি -ভক্ত সুস্মিতা কাজের ডাক এলেই দাঁড়িয়ে পড়েন , চোয়াল শক্ত করে৷ ডিউটি দিতে গিয়ে ভয় করে না ? যদি আপনাকেও মার দেয় কেউ ? কথা শুনে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠেন তিনি৷ ‘আমায় মারবে পরে , আগে নিজেকে সামলাক৷ মদ খেয়ে যা অবস্থা হয় , সোজা হয়ে দাঁড়াতেই তো পারেন না , মারবেন কী ! হাতটা একবার শক্ত করে ধরলেই ওঁদের সব খেল খতম৷ ’ তাঁর কথায় , ‘আসলে এই কাজে শুধু টাকা নয় , মজাও আছে ! জানেন , একবার সিটি সেন্টার টু-তে ‘যব সেজল মেট হ্যারি ’ ছবির জন্য শাহরুখ খান , অনুষ্কা শর্মা এসেছিলেন৷ কত্ত কাছ থেকে দেখেছিলাম শাহরুখকে …উফ৷ ’ডিউটি করতে গিয়ে এই সব ‘পড়ে পাওয়া চোদ্দআনা ’ আনন্দকে অবশ্য খুব একটা তেমন চোখে দেখেন না কবিতা উপাধ্যায়৷

২৭ বছরের কবিতার বাড়িতে রয়েছেন দাদা-মা-বাবা-ঠাকুমা-ঠাকুরদা৷ অভাবের সংসারে ভাললাগার কবাডি -ক্রিকেট খেলা ভুলে , আজ পেশার প্রয়োজনে শরীরটাকে আরও অনেক মজবুত করতে চান তিনি৷ তাঁর কথায় , ‘এই পেশায় একটা কথাই জানতে চাওয়া হয়, দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে তো টানা ৮ ঘন্টা ? ১২ ঘন্টা ? সেই দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই আজ আমরা এক-একটা ঘোড়া হয়ে গেছি ’ ঘোড়া কেন ? চকচকে চোখে চেয়ে থেকে কবিতার জবাব , ‘ঘোড়া যতক্ষণ দাঁড়িয়ে, ততক্ষণই সে আছে৷ একবার বসে গেলেই শেষ৷ আমরাও তাই দাদা৷ তাই না ?’


এই ৫ বিষাক্ত মানুষদের বাদ দিয়েই শুরু হোক আপনার ২০১৮

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: আর মাত্র ১টা দিন। হুল্লোড়ের সঙ্গে বরণ করা হবে নতুনকে। ২০১৮-কে বরণের মধ্যেই ফিরে দেখা চলবে ২০১৭-কেও। কেরিয়ার থেকে ব্যক্তিগত জীবন– ২০১৭’কে প্রভাবিত করেছে এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এগতে হবে। শুভকে যেমন আরও কাছে ডেকে নিতে হবে, তেমনই নেতিবাচক মনোভাবকে দূরে সরিয়ে দিতে হবে। দূর করতে হবে বিষাক্ত মানুষদেরও। কীভাবে? পাঠকদের জানাচ্ছি আমরা-

১) খুঁতখুঁত করা অনেকের স্বভাব হয়। কিন্তু, নিজের জীবন ছেড়ে অন্যের জীবনে খুঁত ধরাটা স্বভাব নয় ইচ্ছা। এমন মানুষদের নিজের চারপাশে রাখবেন না, যাঁরা আপনার প্রতি মুহূর্তে খুঁত ধরে সন্দেহ সৃষ্টি করবে। উদাহরণ- অফিসের অনেক সহকর্মী থাকেন, যাঁদের কৌতূহল বেশি। ‘বেতন বেড়েছে? এত কাজ করো, তাও এত কম বাড়ল?’, এই ধরনের মন্তব্য করে আপনাকে অশান্ত করার চেষ্টা অনবরতই চালাবেন তাঁরা। তাই দূরত্ব বজায় রাখুন।

২) 'নিশ্চিত তো?' এটাই অনেকের সবচেয়ে প্রিয় বাক্য হয়। কোনও কাজ করার আগে ও পরে- এই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিতে পছন্দ করেন তাঁরা। এনারা মনে করেন, এই অনিশ্চয়তার মেঘ সৃষ্টি করে, আপনার থেকে নিজেকে ঊর্ধ্বতন প্রমাণ করবেন। এই ধরনের ব্যক্তিদের দেখা মিললেই রাস্তা বদল করুন।



৩) সুবিধাবাদী স্বভাব খুব সহজেই চোখে পড়ে। এরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী, আপনার সঙ্গে মিশবেন। ওনাদের সঙ্গে সময় কাটানো আপনার কাছে মানানসই হতেই পারে। কিন্তু, আপনার প্রয়োজনে তাঁদের টিকিটিও খুঁজে পাবেন না। তাই বিশ্বাস করার আগে ভাবুন।

৪) বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে হয় না। এটা বাস্তব সত্য। আমাদের জীবনে এমন অনেকেই বন্ধু হিসেবে আসেন, কিন্তু পরবর্তীতে বোঝা হিসেবে থেকে যান। আর নিজেকে বোঝামুক্ত করার অধিকার আপনার রয়েছে। যদি দেখেন, আপনার তথাকথিত বন্ধুটি নিজের প্রয়োজনগুলি আপনার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে, সেক্ষেত্রে বুঝবেন দূরত্ব তৈরির করার সঠিক সময় এসে গেছে।



৫) প্রেম আদৌ রয়েছে তো? সব সম্পর্কেই এই প্রশ্ন করার সময় আসে। সুভাবনা নিয়ে শুরু করা সম্পর্ক অনেক সময়েই কঠিন হয়ে ওঠে। প্রতি মুহূর্তের যন্ত্রণার কারণ হিসেবে মনে হয়। চেষ্টা করুন পুরোনো মুহূর্তই ফিরিয়ে আনার। আর তা না হলে...

একই বিষয়ে আপনাদের কোনও অভিজ্ঞতা থাকলে, ভাগ করে নিন আমাদের সঙ্গেও। কমেন্ট বক্সে জানান আপনার মতামত।

তথ্য সৌজন্য: হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়া

‘একলা চলো’ ছেড়ে এবার ‘দোকলা’র সময়! ৫টি পরামর্শ শুধুমাত্র ‘সিঙ্গল’দের জন্য!!

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৮ এসে গেছে। নতুন বছরে অপেক্ষা করছে নতুন নতুন ইচ্ছা। নতুন আশা, নতুন উদ্দীপনা। বিশেষত যাঁরা ২০১৭-তে ‘একলা চলো’র নীতি নিয়ে চলছিলেন, নতুন বছরে ‘সিঙ্গল টু মিঙ্গল’ হওয়ার সুযোগ খুঁজছেন তাঁরা। তাই ‘সিঙ্গল’ পুরুষদের জন্য ৫টি বিশেষ টিপস্। মেনে চললে, মিলতেও পারে মনের সঙ্গিনী।


পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
নিজেকে পরিষ্কার রাখুন। শীতকালের ঠান্ডায় স্নান না করার অভ্যাস থাকলে আজই ছাড়ুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মানুষের প্রতি সবাই সহজেই আকৃষ্ট হয়। পরিচ্ছন্নতা মানে শুধু ফেসওয়াশ ব্যবহার নয়, শরীরে ঘামের গন্ধ না থাকা। দাঁতের ক্ষেত্রেও নজর দিতে হবে। হলদে দাগ না দেখা যায়। জানিয়ে রাখা ভালো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পুরুষদের প্রতি মেয়েরা বেশি আকৃষ্ট হন।



কান ও নাক
কানের ও নাকের অবাঞ্ছিত লোম কিন্তু দৃষ্টিকটু বিষয়। তাই যত কম তা প্রকাশ্যে দেখানো যায়, ততই ভালো। এ বিষয়ে পুরুষদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

ছোট ও পরিষ্কার নখ
আঙুলের নখ ছোট ও পরিষ্কার থাকা উচিত। নয়ত নখের সঙ্গে, তাতে লেগে থাকা ময়লাও দেখা যায়। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি হয়। তাই নিয়মিত নখ কাটতে ভুলবেন না। শুধু হাত নয়, পায়ের নখও বড় রাখার অভ্যাস ছাড়তে হবে।

দাড়ির যত্ন
দাড়ি ভালো। কিন্তু, নোংরা দাড়ি মোটেই নয়। তাই দাড়ি রাখুন কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কারও করুন। তা না হলে, নজরে পড়তে সময় লাগবে না।



শুষ্কতা
শীতকালে ত্বকে শুষ্কতা দেখা যায়। বিশেষত ঠোঁটের মতো অংশে। তাই, প্রয়োজনে লিপ বাম জাতীয় কিছু ব্যবহার করুন। অন্য ঘরোয়া টোটকাও দেখতে পারেন। কিন্তু, শুষ্ক ঠোঁট মোটেই ভালো নয়।

উপরের পরামর্শ মানার চেষ্টা করুন। কী অভিজ্ঞতা, ভাগ কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে ভাগ করুন আমাদের সঙ্গে।

Watch VDO: ভারতীয়রা ফাটিয়ে দেখছেন পর্ন, যা দেখছেন!

$
0
0
পর্নহাব-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, PORN দেখায় বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ ভারত।পর্নহাব-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, PORN দেখায় বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ ভারত।

গোঁফের সুবাদে দাদাগিরি

$
0
0

সংবাদপত্র থেকে টিভির পর্দায়৷ ‘অন্য সময়’ থেকে ‘দাদাগিরি’-র মঞ্চে ‘গোঁফ-কার্তিক’৷ লিখছেন সুমিত দে৷

ঘুম ছুটেছে ‘গোঁফ-কার্তিক’-এর৷ হাজরা এলাকার কার্তিক দে-র৷ মাত্র কুড়ি দিনের ব্যবধানে! ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, দিন কুড়ি আগে ‘অন্য সময় ’-এর খবর হয়ে উঠেছিলেন কার্তিক৷ তাঁর ২৫ বছরের না-কাটা গোঁফের গরিমায়৷ আর সেই খবরের সূত্রেই তিনি কুড়ি দিনের মাথায় , ৫ জানুয়ারি শুক্রবার পৌঁছে গিয়েছেন জোকায় , ‘দাদাগিরি ’র মঞ্চে ! ‘দাদা ’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে ! ‘দাদাগিরি ’ দেখাতে !

কার্তিকের কথায় , ‘কী যে হচ্ছে , কিছুই ছাই বুঝতে পারছি না ! এখন তো দেখছি আমি হিরো হয়ে গেছি , এই গোঁফ জোড়ার জন্য৷ ভাগ্যিস যত্ন করে সাধের গোঁফটাকে এত দিন ধরে পুষেছি৷ না হলে আজ এত সম্মান পেতাম ?’যদিও ‘দাদাগিরি’-র সেটে , ‘দাদা ’র সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ হেলায় হারাচ্ছিলেন তিনি৷ কারণ ‘অন্য সময় ’-এ তাঁর সম্পর্কে পড়ে , ‘দাদাগিরি ’-র দুই প্রতিনিধি অমিত ঘোষ , মৈনাক মিত্র ছুটে এসেছিলেন হাজরার এক বার-এ৷ তাঁর কর্মস্থলে৷ জানান দিয়ে গিয়েছিলেন , ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তাঁকে পেঁৗছতে হবে জোকায়৷ ‘দাদাগিরি’-র স্টুডিওয়৷ সেখানে হবে তাঁর প্রাথমিক পরীক্ষা৷ পাশ করলে ২৩ -২৪ , শনি -রবিবার সেখানকার গেস্ট হাউসে থেকে , করতে হবে ‘দাদা’-র সঙ্গে শ্যুটিং৷

এমন প্রস্তাবে নানা চিন্তার দোলাচলে ‘দাদাগিরি ’ না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেও , বিন্দাস ছিলেন ‘গোঁফ -কার্তিক’৷ ২৭ ডিসেম্বর বুধবার , সাতসকালে হঠাত্ই হাজরা মোড়ে দেখা তাঁর সঙ্গে৷ অত সকালেও চোখে সানগ্লাস ! পরনে সাদা হাফ প্যান্ট , লাল টি -শার্ট৷ আদব -কায়দায় বেশ হিরো -হিরো হাবভাব৷

স্কুল -কলেজ -হাসপাতাল -পুল করে দিয়েছি৷ কিন্ত্ত আরও অনেক কিছু করার ছিল৷ ওদের আমায় দরকার৷ ’ কথাগুলো বললেন একজন মায়ের মতোই৷ নায়কের সঙ্গে রসায়ন নয় , তাঁর আর শ্রীদেবীর রসায়ন নিয়ে একসময় বলিউডে কথা হত৷ শ্রীদেবীও এখন ফিরে এসেছেন ছবির জগতে৷ আবার কি দু’জনকে একসঙ্গে পাওয়া যাবে ? ‘সেটা এখনই বলতে পারছি না৷ তবে হ্যাঁ, আমরা একসঙ্গে কাজ করতেই পারি৷ এমনকি মাধুরীর সঙ্গেও কাজ করতে চাইব৷ তবে সেই ছবির বিষয় নাচ হলে খুশি হব বেশি৷ আমি মিউজিক্যাল ছবি পছন্দ করি৷ ’ বলিউডের কোন অভিনেত্রীর ছবি তাঁর ভালো লাগে ? একটুও না ভেবেই উত্তর ‘দীপিকা পাড়ুকোণ ’৷

কারণ তিনি মনে করেন , দীপিকাকে যে কোনও চরিত্রেই সুন্দর মানিয়ে যায়৷ চুলবুলি হোক কিংবা রানি ---সবেতেই একটা আলাদা গ্রেস থাকে৷ যদি কখনও দীপিকার মায়ের চরিত্রে অভিনয়ে প্রস্তাব পান , করবেন ? ‘কেন নয় ? আমার কোনও ছুঁতমার্গ নেই৷ হ্যাঁ, তবে সেই চরিত্রের ছবিতে যথেষ্ট গুরুত্ব থাকতে হবে৷ দক্ষিণের ছবিতে তো আমি করেছি এমন চরিত্র ,’ ঝটপট উত্তর জয়ার৷ সত্যজিত্ রায় এক সময় বলেছিলেন ‘তিনি বিশ্বের সুন্দরতম মহিলা ’---প্রশ্ন শেষ করার আগেই জয়া প্রদার মুখ ঔজ্জ্বল্যে ভরে উঠল৷ টানা সাক্ষাত্কার দেওয়ার ক্লান্তিও উধাও৷ ‘হ্যাঁ বলেছিলেন৷ ওঁকে প্রথম দেখেছিলাম এক আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে৷ সেখানে আমি প্রদীপ জ্বালাতে তাঁকে সাহায্য করেছিলাম৷ এরপর উনি বাড়িতে ডাকেন৷ ছবির নকশাও বলেন৷ কিন্ত্ত আমার কপাল খারাপ৷ হতে হতেও কাজটা করতে পারলাম না তাঁর সঙ্গে৷ আমি দেশের সব বড় বড় পরিচালক , প্রযোজক , অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছি৷ কিন্ত্ত বিশ্বাস করুন সত্যজিত্ রায়ের সঙ্গে কাজ করতে না পারার আক্ষেপ আজও রয়েছে৷ এমনিতে বাংলার মানুষ আমাকে খুব ভালোবাসেন৷

আর কে বলতে পারে ওঁর সঙ্গে কাজ করার পর আমি সারাজীবন বাংলাতেই হয়তো থেকে যেতাম ,’ জয়া প্রদা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে যেন ফিরে গেলেন সেই সময়ে৷ ছবি : সাত্ত্বিক পালদেখা হতেই গোঁফে হাত বুলিয়ে এক গাল হাসি হেসে জানালেন , ‘দাদা , আপনাদের কাগজে আমায় নিয়ে লেখা বেরনোর পর , আমি তো একদম ফেমাস হয়ে গেছি৷ ’ ‘দাদাগিরি ’ থেকেও দু’জন এসেছিলেন৷ আমায় যেতে বলেছেন৷ ’শুক্রবার অমিতের কথামতো কার্তিককে নিয়ে পৌঁছেছিলাম স্টুডিওয়৷ গিয়ে জানলাম , শুক্রবার রাতেই হবে সেই এপিসোডের ছ’জন প্রতিযোগীর প্রাথমিক নির্বাচন৷ পরদিন শনিবার , সকালে গ্রমিং সেশন৷ তারপর শ্যুটিং৷ ৬ জানুয়ারি শনিবারই নাকি ছিল ‘দাদাগিরি ’-র এই পর্বের শেষ শ্যুটিঙের দিন৷ যার জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সেটে উপস্থিত ছিলেন টানা সকাল ১০টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত! ৫ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধেতেই , স্টুডিওর রাত্রিবাসে হাজির ছয় প্রতিযোগী৷ মেন্টররা জেনে নিলেন সকলের পরিচয় , ‘কীর্তি’৷ নিলেন স্বল্প সাক্ষাত্কার৷

পরদিন সকাল থেকে দফায় দফায় চলল গ্রুমিং পর্ব৷ তার মাঝেই স্টুডিওয় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে , অন্য প্রতিযোগীদের নিয়ে ‘দাদা ’র শ্যুটিং৷ ‘গোঁফ -কার্তিক’-দের এপিসোডের শ্যুটিং শুরু হল রাত সাড়ে আটটায়৷ ছয় প্রতিযোগীর মাঝে মেকআপ সেরে দাঁড়ালেন কার্তিক৷ নদীয়া জেলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে৷ তাঁর দেড় ফুটের গোঁফ জোড়া দেখে হেসে সৌরভ বলেই ফেললেন , ‘শরাবি ’ ছবির অমিতাভ বচ্চনের বিখ্যাত সেই ডায়ালগ , ‘মুচে হো তো নাথুলালবাবু জ্যায়সে হো , বড়না না হো৷ ’ শুনে হেসে ফেললেন সকলে৷ এরপর সৌরভ যেই জানতে চাইলেন তাঁর এমন গোঁফের প্রেমে পরার কারণ ? উত্তরে দু’হাতে গোঁফে ‘তা ’ দিয়ে গর্বিত কার্তিক সদর্পে জানালেন , ‘মুচ নেহি , তো কুচ নেহি৷ গোছে ধান , মোচে মান৷ ’ শুনে ‘দাদা ’ হাসছেন , দর্শক হাসছেন৷ খেলায় যদিও বেশি দূর এগোতে পারেননি তিনি৷ প্রথম রাউন্ড ‘পাওয়ার প্লে ’-তেই কার্তিক ছিটকে গিয়েছেন খেলা থেকে৷ যদিও তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তিনি৷ রাত্রে শুয়ে শুয়ে জানালেন , ‘আমি মুখুসুখু মানুষ৷ অতশত প্রশ্নের উত্তর জানি ! এই যে ‘দাদাগিরি’-তে , ‘দাদা ’-র সামনে আসতে পারলাম , এটাই বা ক’জন পারেন ?

মাত্র ২ মিনিটের চ্যালেঞ্জ! শিখে নিন টাই বাঁধার সহজ পদ্ধতি

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ফরমাল পরতে পছন্দ করেন? কিন্তু, সমস্যা শুধু টাই বাঁধাতে! আশপাশে এমন উদাহরণ অনেক মিলবে। অধিকাংশ পুরুষদেরই টাই বাঁধতে সমস্যা হয়। অনেকে আবার টাই বাঁধতে গিয়ে গলার মাফলার বানিয়ে ফেলেন।

কিন্তু, টাই বাঁধা আদতে খুব সহজ পদ্ধতি। একবার মনে রাখলেই ভুলবেন না। পাঠকদের জন্য রইল সহজে টাই বাঁধার পদ্ধতি। মনে রাখুন এবং মাত্র ২ মিনিটে বাঁধুন টাই।

১) কোনও সমান টেবিলে পছন্দের টাইটি রেখে প্রথমে হাফ ভাঁজ করে নিন। মনে রাখবেন টাইয়ের ২টি অংশ থাকে। চওড়া ও সরু।

২) চওড়া অংশটি গলার সরু অংশের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে নীচে আনুন। দেখবেন একটি ফাঁস তৈরি হচ্ছে।

৩) এবার চওড়া অংশটি আরও একবার সরু অংশের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে ফাঁসের নীচ দিয়ে উপরের দিকে টানুন।

৪) একই চওড়া অংশটিকেই ফাঁসের মধ্যে দিয়ে গলিয়ে হালকা টান দিন।

৫) চওড়া অংশের পুরোটাই উপরের দিকে টেনে তুলুন। এবার ওই অংশটি ফাঁসের মধ্যে দিয়ে ঢুকিয়ে টেনে বের করে নিন।

আর কী চাই! টাই বাঁধা যে হয়ে গেছে! আরও একবার অভ্যাস করে নিন। দেখবেন টাই বাঁধা আরও সহজ হয়ে গেছে। রইল VDO-ও।আরও সুবিধার জন্য দেখুন -

Viewing all 1188 articles
Browse latest View live


<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>